এখন চলছে আমনধান কাটা মাড়াইয়ের পুরো মৌসুম। পুরুষের সাথে নারীরা সমান তালে মাঠে কাজ করছেন। অধিকাংশ পুরুষ শ্রমিক বাড়ির বাইরে থাকায় রংপুর অঞ্চলে কৃষি সেক্টর এখন নারীদের হাতের মুঠোয়। তবে এখন পর্যন্ত নারীদের সমমজুরি নিশ্চিত হয়নি। নারী শ্রমিকরা দিন হাজিরা কাজ করে পাচ্ছেন ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা। অপরদিকে পুরুষরা পাচ্ছেন ৭/৮ শত টাকার ওপরে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ পুরুষ শ্রমিক অভিবাসী। তারা জীবিকার তাগিদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। পুরুষ শ্রমিকরা বাড়ির বাইরে অবস্থান করায় এ অঞ্চলে প্রতি বছরই নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। নারীরা এখন ক্ষেতে কাজ করছেন।
নারী শ্রমিকরা ক্ষেতে বীজতলা লাগানো, ক্ষেত পরিচর্যা, জমি নিড়ানি, ফসল ঘরে তোলাসহ সব ধরনের কাজ করছেন। কৃষি সেক্টরের প্রতিটি বিভাগই নারীদের হাতে। কিন্তু মজুরির বেলা পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে অনেক কম পাচ্ছেন। এখন সড়ক, মহাসড়কের পাশে দাঁড়ালেই দেখা যাবে শত শত নারী শ্রমিক ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানাগেছে, রংপুরের চরাঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার পরিবারের বাস। এক সময়ের অবস্থাসম্পন্ন এসব পরিবার নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে কোনোমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। শ্রম বিক্রিই তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন।
রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের দর্শনা এলাকায় শুক্রবার দেখা যায় নারীরা দল বেঁধে জমি থেকে ধান কেটে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলেন, ক্ষেতে বীজতলা থেকে ধান কাটা পর্যন্ত তারা কাজ করেন। এছাড়া আলু রোপণ ও উত্তোলনের সময় তারা কাজ করেন।
ওই এলাকার নারী শ্রমিক বালা রানী, ময়না দেবী বলেন, হাড়ভাঙ্গ পরিশ্রম করেও পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছি না। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়েও বেশি কাজ করতে হয়।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট পুরুষ শ্রমিকের ২০ শতাংশ নারী শ্রমিক এই অঞ্চলে কাজ করছেন। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

