রংপুরে ঈদের ছুটিতে বাগড়া দিচ্ছে তাপদাহ

0
রংপুরে ঈদের ছুটিতে বাগড়া দিচ্ছে তাপদাহ

ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জান্নাত জ্যৌতি। ঈদুল আজহার দুইদিন আগে ৮ ঘণ্টার রাস্তা ২২ ঘণ্টায় পাড়ি দিয়ে রংপুর নগরীর শাহীপাড়ায় নিজ বাড়িতে এসেছেন। ভেবেছিলেন ঈদের ছুটি ভালোভাবে কাটিয়ে চাকরিতে যোগ দিবেন। কিন্তু তার ঈদ উদযাপনের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রচণ্ড তাপদাহ। কয়েকদিন থেকে রংপুর এবং আশপাশ এলাকায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তপ্ত আবহাওয়ার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি তিনি। কোন আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করতে পারেননি। এক প্রকার ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন তিনি গরমের কারণে। তার মত মাহফুজা শারমিনও ঈদ করতে এসেছেন। সাথে ৬ বছরের মেয়েকে নিয়ে। প্রচণ্ড গরমের কারণে কোথাও বের হতে পারেননি। বিরুপ আবহাওয়ার কারণে দুইদিন থেকে তার মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মত অনেকেই ঈদ উদযাপন করতে এসে তাপদাহের কারণে বিপাকে পড়েছেন। গরমের কারণে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারছেন না। 

আবহওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, রংপুর ও আশপাশ এলাকায় কয়েকদিন থেকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। আকাশে মেঘের কোন ছিটেফোটা নেই। আকাশে মেঘ না থাকার কারণে সূর্যের কিরণ সরাসরি ভূপৃষ্ঠের ওপর পড়ছে। ফলে ভূপৃষ্ঠের খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে প্রকৃতিতে। প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষজন এবং জীবজগতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে প্রায় ঘরেই জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিচ্ছে। প্রাণী জগতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গরু, হাস-মুরগির খামারীরা তাদের পশুর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হিমসিম খাচ্ছেন। তপ্ত রোদের কারণে রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। মানুষের তাপদাহে হাঁসহাঁস উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেয়া গেছে পথিকের জন্য সড়কগুলো খাঁ-খাঁ করছে। লোকজন নেই বললেই চলে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দেখা গেছে ক্রেতা শূন্য।
 
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি পুকুরে কিশোর-যুবক এবং বয়স্ক বেশ কয়েকজন সাঁতার কাটছে। স্থানীয় জালাল মিয়া বলেন, গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পুকুরে ডুব দিয়ে সকলে একটু শীতল পরশ নেয়ার চেষ্টা করছেন।
 
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার ছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়ারম, মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, দুই একদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাবে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here