কয়েকদিন ধরে রংপুর ও আশপাশ এলাকায় হিমেল হাওয়া, বৃষ্টির মত ঘন কুয়াশা ঝরছে। সেই সাথে রয়েছে তীব্র শীত। উত্তর-পশ্চিম থেকে ধেয়ে আসা বাতাসে আলুর ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চললে লেটব্রাইটসহ নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারে আলুর ক্ষেত। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, আলুর ক্ষেত রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তাজিদুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, পীরগাছার কল্যানী ইউনিয়নের বুলবুল ইসলামসহ অনেকে জানান, ধার দেনা করে জমিতে আলু রোপন করেছেন বেশি লাভের আশায়। হঠাৎ করে শীত ও পশ্চিমা বাতাস বইতে শুরু করায় আলু ক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আলুতে লেটব্রাইট রোগ দেখা দিবে। ফলে আলুর উৎপাদন ব্যাহত হবে। তারা বলেন, জমিতে ছত্রাকনাশকসহ বিভিন্ন ওষুধ স্প্রে করে আলু ক্ষেত রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে অনেকের জমির আলুর বয়স ৫০ থেকে ৬০ দিন হয়েছে। আলু সাধারণত ৯০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর থেকে বাজারে আলুর দাম ভাল পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা এবার বেশি পরিমান জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার জেক্টর বেশি জমিতে এবার আলুর আবাদ হয়েছে। বেশি জমিতে আলু রোপন হওয়ায় দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। এর মধ্যে প্রকৃতি বিরুপ আচরণ শুরু করায় আলুচাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। অনেকে জমিতে আগাম ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে আলু রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৩৯ হেক্টর। আলুর উৎপাদন হেক্টর প্রতি ২০ টনের বেশি হয়ে থাকে। এ পরিমান জমি থেকে প্রায় ২৮ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চার বছর আগেও এই অঞ্চলে এক লাখ হেক্টরের কম জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়েছে রংপুর জেলায়। বেশি পরিমান জমিতে আলুর আকাদ করায় দাম কমে যাওয়ার শঙ্কার সাথে নতুন বিপদ দেখা দিয়েছে প্রকৃতির বৈরিতা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আলু চাষের জন্য আবহাওয়া কিছুটা বৈরি আচরণ করছে। এ ধরণের আবহাওয়া আরও কয়েকদিন থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকরা আগের চেয়ে এখন অনেক সচেতন। তারা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।