ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ষড়যন্ত্র নস্যাতের দাবি করল ইরান। দেশটির গোয়েন্দা বাহিনী নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জটিল নাশকতার ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র নস্যাত করেছে বলে এই দাবি করা হয়।
বৃহস্পতিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলগুলো থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নষ্ট করতে ইসরায়েলের গুপ্তচর বাহিনী ও তাদের আন্তর্জাতিক সহযোগীরা এই চক্রান্ত করেছিল।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, শত্রুদের বিরুদ্ধে ইরানের দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ কারণে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্প সব সময় শত্রুর টার্গেটে রয়েছে।
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দেশটির গোয়েন্দা বাহিনী একটি পেশাদার গুপ্তচর নেটওয়ার্ককে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে যেটি দেশে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করার জন্য এমন সব যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছিল যা একটা নির্দিষ্ট সময় পর বিস্ফোরণ ঘটাতো।
ইরানের টিভি চ্যানেলগুলোতে এমন কিছু যন্ত্রাংশের ছবি সম্প্রচার করা হয়েছে যেগুলোর নাম কানেক্টর। এসব যন্ত্রাংশ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে কন্ট্রোল সিস্টেমের সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার করা হয়। এসব যন্ত্রাংশকে কৌশলে এমনভাবে তৈরি করে ইরানের কাছে সরবরাহ করা হয়েছিল যাতে কিছু দিন পর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটে অথবা কমান্ড গ্রহণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব যন্ত্রাংশ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে কাজে লাগানো হলে অদূর ভবিষ্যতেই বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিত বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। যন্ত্রাংশগুলোকে বিপজ্জনক করে তুলতে সেগুলোতে যেসব কাজ করা হয়েছে তার পেছনে ছিল ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ও তাদের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।
ইরানের একটি সূত্র জানিয়েছে, যে যন্ত্রটি দিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পে বিপর্যয় সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছিল তা দেশে উৎপাদন করা হলে অর্থনৈতিক বিবেচনায় সায়শ্রী সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হতো না। এ কারণে তা আমদানি করা হতো। কিন্তু নাশকতার এই ষড়যন্ত্র ফাঁস হওয়ার পর থেকেই ইরান এই যন্ত্রাংশ তৈরির কাজে হাত দেয় এবং এখন ইরান নিজেই এই যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশে এই যন্ত্রাংশ রপ্তানিরও পরিকল্পনা নিয়েছে ইরান। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স, প্রেসটিভি, টাইমস অব ইসরায়েল