ইউক্রেনে ড্রোন হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। এরই মধ্যে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে শত শত ড্রোন দিয়ে হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। দিন যতই যাচ্ছে ড্রোন হামলার ভয়াবহতা ততই বাড়ছে। ব্যাপক হামলার মুখে নিরুপায় হয়ে গোটা একটি শহর জাল দিয়ে ঢেকে দিয়েছে ইউক্রেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের সব রাস্তাঘাট জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, মহাসড়কগুলোর পাশে ইতোমধ্যেই খুঁটির বেড়া তৈরি করা হয়েছে। শহরের কাছাকাছি, শ্রমিকরা খুঁটির ওপর ড্রোন-প্রতিরোধী জাল বিছিয়ে দিচ্ছে।
গ্রাম্য রাস্তা, সামরিক স্থাপনা এমনকি হাসপাতালের প্রবেশ পথেও স্থাপন করা হয়েছে জাল। অব্যাহত ড্রোন হামলার মুখে এই জালই হয়ে উঠেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এসব জালের উদ্দেশ্য ড্রোন ধ্বংস করা নয়, বরং ড্রোনের কার্যকারিতা হ্রাস করা।
আগে ড্রোন হামলা ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় ছিল জ্যামার ব্যবস্থা। কিন্তু ফাইবার অপটিক নির্ভর ড্রোনের ক্ষেত্রে সেই প্রযুক্তি এখন আর কাজ করে না। ফলে জাল-ব্যবস্থার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে ইউক্রেনকে।
রাশিয়া শুধু হামলার জন্য নয়, বরং নজরদারির জন্যও এসব ড্রোন ব্যবহার করছে। আর এসব ড্রোন ইউক্রেনীয়দের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, রাস্তাঘাট, অফিস ও অবকাঠামো শনাক্ত করতে পারে। ড্রোন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহজনক নড়াচড়া দেখলেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে লক্ষ্যবস্তুতে হামলাকারী ড্রোন পাঠানো হয়। ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বেড়েছে।
এসব কারণে ইউক্রেন কেবল সামরিক স্থাপনা নয়, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট, রসদ পরিবহনের পথ ও অ্যাম্বুলেন্স থামার জায়গার ওপরও জাল বিছিয়ে দিচ্ছে।
কোথাও গাছের সারির সঙ্গে জাল টাঙানো হয়েছে। আর কোথাও এই জাল স্থাপনে ব্যবহার করা হয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের কাঠামো। তবে ইউক্রেন স্বীকার করেছে, ড্রোন হামলা ঠেকাতে এসব সস্তা জাল কোনও জাদুকরী পন্থা নয়। তবে সাময়িক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি।
ইউক্রেনীয় কমান্ডারদের দাবি, আকাশ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও তারা কমিয়ে দিতে পারছে রুশ হামলার গতি। সে লক্ষ্যেই পরীক্ষা করা হচ্ছে জালের নতুন নতুন নকশা। তাই তো, কোথাও ব্যবহার হচ্ছে মাছ ধরার জাল, কোথাও মোটা রশির গ্রিড আবার কোথাও নানা ধরনের উপকরণ মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী সুরক্ষার দেওয়াল।
দিনের আলোয় এগুলোকে সাধারণ ঝুলে থাকা জালের মতো লাগলেও রাতে তা হয়ে ওঠে ইউক্রেনীয় সেনাদের ঢাল। তথ্যসূত্র: টপওয়ার

