রাশিয়া–ইউক্রেনের মধ্যে চলমান দীর্ঘদিনের যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৮ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনা দিয়েছেন। তিনি দাবি করছেন—এটি বাস্তবায়িত হলে ‘ভালো কিছু ঘটতে যাচ্ছে’। তবে কিয়েভ ও তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের মতে, এই প্রস্তাবের মূল কাঠামো রাশিয়ার ইচ্ছাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। তাই যুদ্ধ শেষ হলেও ইউক্রেনকে বেশ কিছু বড় ছাড় দিতে হতে পারে।
প্রস্তাবে সবচেয়ে আলোচিত শর্ত হলো ইউক্রেনের সেনাসংখ্যা ৬ লাখে সীমিত রাখা এবং সংবিধানে উল্লেখ করা যে, তারা ন্যাটোতে যোগ দেবে না। ন্যাটোকেও ইউক্রেনকে সদস্য না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। পাশাপাশি ইউক্রেনে ন্যাটো সেনাও মোতায়েন করা যাবে না।
আরেকটি বড় বিষয় হলো জাপোরিঝঝিয়ার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এটি চালাবে জাতিসংঘের আইএইএ (আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা)। উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাশিয়া ও ইউক্রেন সমান ভাগে পাবে।
সবচেয়ে জটিল অংশ হলো ভূখণ্ড ত্যাগের বিষয়টি। প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়—ক্রিমিয়া, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ। দোনেৎস্কের যেসব এলাকা এখনও ইউক্রেন নিয়ন্ত্রণ করে, সেখান থেকেও সেনা সরিয়ে নিরপেক্ষ বাফার জোন তৈরি করতে হবে।
শান্তি চুক্তির ১০০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথাও রয়েছে। যুদ্ধের কারণে স্থগিত হওয়া নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই কিয়েভ সমালোচনার মুখে ছিল।
এ ছাড়া চার বছর ধরে চলা যুদ্ধের সকল পক্ষকে পূর্ণ ক্ষমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে—অর্থাৎ ভবিষ্যতে কোনো অভিযোগ বা বিচার দাবি করা যাবে না।
তবে আলোচনার পর জেনেভায় ট্রাম্প প্রশাসন প্রস্তাবের অনেক অংশ সংশোধন করেছে। ২৮ দফা কমিয়ে ১৯ দফায় আনা হয়েছে। কিয়েভ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর দাবি—ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনা অবশ্যই বর্তমান সম্মুখসারি থেকে শুরু হতে হবে এবং দখল করা অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না।

