যুক্তরাষ্ট্রের ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি পেলেন মাসুমা খান

0
যুক্তরাষ্ট্রের ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি পেলেন মাসুমা খান

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ডিটেনশন সেন্টার থেকে ৩১ দিন পর গত ৫ নভেম্বর মুক্তি পেলেন বাংলাদেশি মাসুমা খান (৬৪)। মাসুমা খানের অভিবাসন মর্যাদা সমন্বয়ের (স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্ট) জন্য আবেদন করেছিলেন তার স্বামী ইশতিয়াক খান। আবেদনের পর লস অ্যাঞ্জেলেসস্থ ইমিগ্রেশন অফিসে (৬ অক্টোবর) হাজিরা দিতে গেলে তাকে আটক করে ক্যালিফোর্নিয়া সিটি ডিটেনশন সেন্টারে রেখেছিল আইসের (ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এ্যানফোর্সমেন্ট) এজেন্টরা। 

এমন ঘটনার পর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মাসুমা খানের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয় এলাকার কংগ্রেসওম্যান জুডি চু এবং ইউএস সিনেটর এডাম শেফ। একইসাথে মাসুমা খানের কন্যা এটর্নি রিয়া খানও ইমিগ্রেশন কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। এছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক’র পক্ষ থেকেও জটিল রোগে আক্রান্ত মাসুমা খানের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল। 

এরপর ফ্রেসনো কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্ট মাসুমা খানকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। ১৪ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজিরার জন্য বলা হয়েছে। একইসাথে আদালত আইস-সহ ইমিগ্রেশনের সকল সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্ট’র আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাসুমা খানকে গ্রেফতার না করার জন্য। 

মাসুমা খানের মুক্তির পর এটর্নি রিয়া খান ক্ষোভের সঙ্গে জানান, লসএঞ্জেলেস সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি একটি দুষ্ট চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন আমার মা। তারা মোটা অংকের অর্থ নিয়ে আশ্বাস দিয়েছিল গ্রীন কার্ডের সবকিছু করে দেওয়ার। সেটি ১৯৯৭ সালের কথা। সেসময় আমার মা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ট্যুরিস্ট ভিসায়। দুর্বৃত্ত চক্রটির নিষ্ঠুর প্রতারণার শিকার হয়েছেন আমার সহজ-সরল মা। রিয়া খান এসব চক্রের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চক্রটি মাসুমা খানের নাম পরিবর্তন করে ‘নূরজাহান’ নামে এসাইলামের আবেদন করেছিল। মাসুমা খানকে বলা হয়েছিল যে, সবকিছু হয়ে যাবে রীতি অনুযায়ী। মাসুমা খান ইউএস সিআইএস’র কোনো নোটিশ বা তার সেই ভুয়া নামে করা আবেদন যে নাকচ হয়েছে সেটিও জানতে পারেনি। এরমধ্যেই তার স্বামী (যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন) ইশতিয়াক খান তার জন্য স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্ট’র আবেদন করেন ২০২০ সালে। এই আবেদনের পর মাসুমা খান জানতে পারেন যে, তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ জারি হয়েছে। এরপর বহিষ্কারাদেশ উঠিয়ে নিতে দুই বার আবেদন করেছিলেন। দুই বার নাকচ করা হলেও ইউএসসিআইএস (যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস) মাসুমা খানের স্ট্যাটাস’র ব্যাপারটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী বছরে অন্তত একবার করে নিকটস্থ ইমিগ্রেশন অফিসে হাজিরার প্রক্রিয়ায় ছিলেন তিনি। গত ৬ অক্টোবর হাজিরা দিতে গিয়ে ট্রাম্পের চলমান অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার কর্মসূচিতে আটক হয়েছিলেন তিনি।

এমন অবস্থায় মাসুমা খান ন্যায় বিচার চেয়েছেন এবং তার মুক্তির জন্য যারা সচেষ্ট ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here