নেত্রকোনার মদনে ইজিবাইকে ফেলে যাওয়া যাত্রীর এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে ইজিবাইক চালক রাসেল মিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায়। এদিকে এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকা হাতে পেয়ে চালকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রহিমা আক্তার নামের নারী। সদ্য তুলে নেওয়া টাকা হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে যাওয়া রহিমা টাকা হাতে পেয়ে বললেন এই টাকা না পেলে মরার সমান ছিলো তার। একে তো টাকা হারানো গেছে। দুই এই টাকার ঋণ শোধ করতে গিয়ে তাকে বিড়ম্বনা পোহাতে হতো।
জানা গেছে, মদন থানার কুলিয়াটি দক্ষিণপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রাসেল মিয়া মদনেই ইজবাইক চালিয়ে সংসার চালান। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী তুলে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। এরই ধারবাহিকতায় বিকালে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রহিমা আক্তারের ননদ তারিফা নামের নারী ওঠে আটপাড়া রোডের বাজারে নেমে যান। কিন্তু টাকার ব্যাগ ইজিবাইকে ফেলে যান। বাড়ি গিয়ে টাকার খোঁজ করলেও দিশেহারা হয়ে পড়েন। এদিকে সন্ধ্যায় ইজিবাইক চালক রাসেল মিয়া বাড়ি গিয়ে দেখেন একটি ব্যাগ তার গাড়িতে। সেটি নিয়ে থুলে দেখতে পান অনেক টাকা ও কাপড় চোপর। পরে বাবার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে স্ট্যান্ডের মাস্টার ছোটন মিয়াকে জানান। ছোটন মিয়া সভাপতি কামরুল মিয়াকে জানায়। পরে কামরুল মিয়া বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের কাছে বললে টাকার মালিক খোঁজ করে সভাপতির চেম্বারে ডেকে সোমবার রাত ১১ টার দিকে নারীর হাতে টাকার ব্যাগ তুলে দেন।
টাকার মালিক রহিমা আক্তার জানান, তার বাড়ি আটপাড়া উপজেলার তারচাপুর গ্রামে। স্বামী ওয়াছকরুনী অসুস্থ হওয়ায় তাকে মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু নানা সমস্যা দূর করতে সোমবার দুপুরে মদন ব্রাক ব্যাংক থেকে তিনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা তুলে স্বামীকে দেখতে হাসপাতালে যান। সেখানে স্বামীর ছোট বোন থাকায় তার হাতে টাকাটা দিয়ে দেন বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু পথে টাকা ফেলে যাওয়ায় বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। অবশেষে টাকা হাতে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতিকৃতজ্ঞতা জানায় তারা।
মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দ বলেন, এখনকার সময় সৎ মানুষ পাওয়াটা খুব কঠিন। রাসেল ইজিবাইক চালক হয়েও সে যে সততার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে এটি একটি অনন্য উদাহরণ।