চিংড়ি, কাঁকড়া, সুস্বাদু পানির মাছ, সামুদ্রিক মাছসহ অন্যান্য মাছ বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বিপুল সম্ভাবনা বিরাজ করছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এই সুযোগ কাজে লাগালেও বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সম্ভাবনাময় এই খাতের অবারিত সুযোগগুলো কাজে লাগাতে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাছের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে এই খাতের জন্য পৃথক দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চায় মৎস্য খাতের ব্যবসায়ীরা।
সোমবার মৎস্য খাত বিষয়ক এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় বক্তারা একথা বলেন। এসময় ব্যবসায়ীরা বলেন, চিংড়ি, কাঁকড়া ও অন্যান্য মাছ রফতানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সুযোগ রয়েছে। তবে মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে। বাধাহীনভাবে মাছ চাষের জন্য দেশের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দসহ নদীতে কেজকালচার বা খাঁচা পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে মৎস্য চাষে সরকারের সহযোগিতা পেলে মাছের উৎপাদন অনেক বাড়বে।
মৎস্য খাতের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিন হেলালী। মৎস্য খাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো সমাধান করা গেলে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, ২০৩০ সালে দেশের জনসংখ্যা হতে পারে ২৪ কোটি। আর এ জনসংখ্যার জন্য ৬০ লাখ মেট্রিক টন মাছ দরকার হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে মৎস্য খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য। এক্ষেত্রে মৎস্য চাষীদের স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ ও থানা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষে প্রশিক্ষণের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর। মৎস্য খাতের উন্নয়নের জন্য ব্যবসায়ীদের দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দের দাবির সাথে একমত পোষণ করেন তিনি। এছাড়া মাছ রফতানি বাড়াতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানান তিনি। এসময় অবৈধ জাল দিয়ে নদী ও সাগরে মৎস্য নিধনের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ বাবুল আক্তার। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, নিয়াজ আলী চিশতী, এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ।