ঝিনাইদহে মোবাইল চুরির অপবাদ দেওয়ায় সাকিব মীর (১৭) নামের এক যুবককে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী মনির ওরফে আশরাফুল মোল্যাকে (১৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত সাকিব পৌরসভার উদয়পুর গ্রামের নানা ওসমান লস্কারের বাড়িতে স্থায়ী বসবাস করতো ও মাগুরা সদর উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের শামীম মীরের ছেলে। গ্রেফতারকৃত আসামি বর্তমান উদয়পুর গ্রামের জনৈক কামিরুলের বাসার ভাড়াটিয়া ও যশোর বাবলাতলার ১নং ওয়ার্ডের গাফফার মোল্যার ছেলে। আজ শুক্রবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান।
পুলিশ সুপার আরো জানান, মরদেহটি সনাক্তের পর আসামি মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। আসামির দেওয়া তথ্যানুযায়ী পুলিশ জানতে পারে, আনুমানিক ৪/৫ মাস আগে উদয়পুর গ্রাম থেকে ২টি মোবাইল চুরি হয়। ওই সময় মনির মোবাইল ২টি চুরি করেছে বলে সাকিব গ্রামে বলে দেয়। সেসময় গ্রামের লোকের মারের ভয়ে কিছুদিন গা ঢাঁকা দেয় আসামি মনির। পরবর্তীতে মোবাইল চুরির বিষয়টি কিছুটা শিথীল হলে আসামি এলাকায় ফিরে আসে। সেই থেকে সাকিবের উপর আসামির ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সাকিবের সাথে ১ জুলাই শনিবারে উদয়পুর তিন রাস্তার মোড়ে আসামির দেখা হয়। পূর্বের রাগের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আসামী তার পূর্ব পরিকল্পিত প্লান মতে সাকিবকে ছাগল চুরির কথা বললে তাতে সাকিব রাজি হয়। ওই রাতে বিসিকের মোড়ে আসার কথা বলে মনির। ওইদিন দুপুরে আসামি তার বাড়ি থেকে ১টি দা আগে এনে বিসিক এলাকার একটি দোকানের নিচে লুকিয়ে রাখে। একই দিন গভীর রাতে সাকিব বিসিক মোড়ে আসে। বিসিক মোড় থেকে ১টি ব্যাগে করে দা, দুই প্যাকেট নাটি বিস্কুট, এক বোতল পানিসহ আরো কিছু জিনিস নিয়ে বাই-সাইকেল যোগে তারা রাত সাড়ে ৩টার দিকে আড়ুয়াকান্দি গ্রামে একটি পাটক্ষেতে যায়। তারা আলোচনা করে রাত আরো গভীর হোক, তারপর ছাগল চুরি করতে যাবো। পূর্ব পরিকল্পিত অনুযায়ী সেখানে তারা গাঁজা খায়। সাকিব গাঁজা খেয়ে বেশামাল হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে, ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেওয়ার জন্য আসামি মনির পাশেই মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি ছবি দেখে হস্তমৈথুন করে কনডম পাশে পাটক্ষেতে ফেলে দেয়। এরপর মনির দা (ছোল) দিয়ে সাকিবকে গভীর রাতে কুপিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। পরে দা, গামছা, লুঙ্গি ও কনডমের খালি প্যাকেট, কোলকে, কাইচি একটি শপিং ব্যাগে ভরে হাইওয়ে রোডের পাশে পাটক্ষেতে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে মনিরের দেখানো তথ্য মতে হত্যার সময় ব্যবহৃত দা (সোল), গামছা, লুঙ্গি এবং কনডমের খালি প্যাকেট, কোলকে, কাইচি উদ্ধার করা হয়েছে। যা আসামি মনির ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।