লিওলেন মেসি যেখানে যান, সেখানেই লেখেন মহাকাব্য। সাফল্য যেনো তার কাছে ডালভাত। তিনি ছুঁলেই যেনো জীবনি আঁচে সবুজ হয়ে ওঠে ধূসর মরু প্রান্তর। ফুটবল মাঠে মেসি যা চান, তা-ই যেনো হয়।
মার্কিন ক্লাব ইন্টার মায়ামিও মেসির পরশ পাথরের ছোঁয়ায় হয়েছে খাঁটি সোনা। আরাধ্য ট্রফি তুলেছে ঘরে। মেসিও এমম সাফল্য শিখর ছুঁতে পেরে আপ্লুত, তৃপ্তও বটে। স্রোতের বিপরীতে হেঁটে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছিলেন মেসি, শিরোপাই ছিলো তার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় তার উচ্ছ্বাস আছে। তবে আগেকার মতো এবারও পুরো কৃতিত্ব মেসি নিজে নিলেন না, সাফল্য সৌরভ বিলিয়ে দিলেন সভার মাঝে।
দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থমাস মুলার প্রায়শই লিওনেল মেসির সঙ্গে দ্বৈরথ উপভোগ করে আসছেন। এই দুই তারকার মধ্যে ১০টি সরাসরি লড়াইয়ের মধ্যে সাতটিতেই জয়ী হয়েছেন জার্মান তারকা। তার দল দুই বার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়েছে মেসি ও আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু শনিবারের সর্বশেষ তারকাখচিত মহারণে পাল্টে গেল ছবিটা, এবার মেসির পালা।
আর্জেন্টাইন মহাতারকা তার তৃতীয় মেজর লিগ সকার (এমএলএস) মৌসুম শেষ করলেন ক্যারিয়ারের ৪৭তম ট্রফি ঘরে তু্লে। এমএলএস কাপের ফাইনালে মুলারের ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে ইন্টার মায়ামিকে চ্যাম্পিয়ন করলেন তিনি।
এমএলএসের বিবৃতিতে মেসি বলেন, তিন বছর আগে আমি এমএলএসে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এবং আজ আমরা এমএলএস চ্যাম্পিয়ন। আমরা (কনকাকাফ) চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলাম। গত বছর আমরা লিগ থেকে দ্রুত বিদায় নিয়েছিলাম এবং প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিলাম। এই বছর, এমএলএস জেতা আমাদের প্রধান লক্ষ্যগুলির মধ্যে একটি ছিল।
ম্যাচের ৭২তম মিনিটে রদ্রিগো ডি পলকে পাস দিয়ে এগিয়ে যাওয়া গোলটি তৈরি করে দেন মেসি, এরপর অতিরিক্ত সময়ে আরেকটি অ্যাসিস্ট করে ইন্টার মায়ামির ইতিহাসে প্রথম চ্যাম্পিয়নশিপ এনে দেন।
মেসি বলেন, দল অসাধারণ চেষ্টা করেছে, আমরা পুরো মৌসুম জুড়েই প্রস্তুত ছিলাম। এই মুহূর্তটির জন্যই আমি অপেক্ষা করছিলাম এবং দল হিসাবে আমরাও অপেক্ষা করছিলাম। এটা আমাদের সকলের জন্য খুবই সুন্দর।
শনিবারের ম্যাচের অনেক আগেই মেসি ও মুলার দুই জনেই নিজেদের ফুটবল উত্তরাধিকার নিশ্চিত করেছেন। দু’জনেই বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী। দু’জনেরই ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন। তারা প্রায় একই লক্ষ্যে এমএলএস-এ এসেছিলেন।
মুলার ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং ২০১০ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মেসি ও আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করেছিলেন। তবে এবার আর তা হয়নি, শেষ বাজিতে জিতলেন মেসি।
এর পরের ট্রফি বিতরণী অনুষ্ঠানে অবশ্য মুলার হাসিমুখে হাততালি দেন এবং মেসি ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের মুকুট পরার সময়ও তাকে অভিবাদন জানাতে দেখা যায়।
ভ্যাঙ্কুভারের কোচ জেসপার সোরেনসেন বলেন, যখন আপনি কিছু পেতে চান, তখন না পেলে আরও বেশি কষ্ট হয়। আমি (দলকে) বলেছিলাম আমরা কখনই স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলাম না। আমার মনে হয় থমাস যখন এসেছিলেন তখন এটাই বলেছিলেন। আমরা কঠোর পরিশ্রমী। আজ আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমরা খেলাটিকে ১-১ এ আমাদের কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে এসেছিলাম… এরপর আমরা একটি ভুল করি এবং বলটি মেসির কাছে যায়। এবং সে রদ্রিগোকে একটি খুব, খুব ভালো পাস দেয়।
ইন্টার মায়ামির প্রথম বর্ষের কোচ জাভিয়ের মাশ্চেরানো বলেন, আমি তার জন্য খুব খুশি। আমি খুব খুশি কারণ সে যে মৌসুম খেলেছে… তার জন্য এই ট্রফি জেতাটা খুব, খুব বিশেষ এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে এখানে এই ট্রফি জিততেই এসেছিল।

