মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারের জানাজা রবিবার দুপুরে

0
মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারের জানাজা রবিবার দুপুরে

সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার, বীর উত্তমের জানাজার নামাজ আগামীকাল রবিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হবে। এসময় তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার প্যারেড গ্রাউন্ডে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এ কে খন্দকার হিসেবে পরিচিত আব্দুল করিম খন্দকার বীর উত্তম শনিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি এক কন্যা, দুই পুত্র ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এ কে খন্দকারের জন্ম ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি। পিতার তৎকালীন কর্মস্থল ছিল রংপুর শহরে। তার পৈতৃক বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার ভারেঙ্গা গ্রামে। তার পিতা খন্দকার আব্দুল লতিফ ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং মাতা আরেফা খাতুন ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে এ কে খন্দকার ছিলেন তৃতীয়।

পিতার চাকরির সুবাদে তার শিক্ষাজীবনের শুরু বগুড়া শহরে। সেখানে তিনি কিছুদিন বগুড়া করোনেশন স্কুলে পড়াশোনা করেন। ভারত বিভক্তির বছরে, ১৯৪৭ সালে তিনি মালদা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) থেকে পাইলট অফিসার পদে কমিশন লাভ করেন। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি ফাইটার পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান এয়ার ফোর্স একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর স্কুলে ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে এবং পরে জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬১ সাল পর্যন্ত তিনি পিএএফ একাডেমিতে স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে স্কোয়াড্রন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি পিএএফ একাডেমির ট্রেনিং উইংয়ের অফিসার কমান্ডিং হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। পরে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি পিএএফ প্ল্যানিং বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই বছর ঢাকায় অবস্থিত পিএএফ বেইসের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে নিয়োগ পান।

উইং কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ কে খন্দকার মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক (ডেপুটি চিফ অব স্টাফ) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তাকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ব্যক্তিগত উপ-প্রধান সেনাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তার অবদান জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here