মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশি বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনের শততম জন্মদিন পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলায় উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জালি, শোভাযাত্রা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সোমবার সকালে শোভাযাত্রা সহকারে মোংলা পৌরসভার সেন্ট পল্স গির্জা প্রাঙ্গণে ফাদার মারিনো রিগনের প্রতিকৃতিতে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জালি প্রদান করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, সেবা সংস্থা, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ এবং ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে ফাদার রিগনের কর্মময় জীবনের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
খ্রিস্ট ধর্মযাজক হিসেবে মারিনো রিগন ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে শেষে তিনি মোংলার শেলাবুনিয়া গ্রামে একটি চার্চ ও একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ওই গ্রামেই তার স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ছিল তার অকুণ্ঠ সমর্থন। যুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিতে নিজের প্রতিষ্ঠিত চার্চে গোপনে একটি চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন তিনি। তার এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা নিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা সুস্থ হয়ে পুনরায় রণাঙ্গনে ফিরে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে ফাদার মারিনো রিগনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৯ সালে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়। এরপর ২০১২ সালে দেয় ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’। তার অন্তিম ইচ্ছা পূরণে ইতালিতে মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর মরদেহ ইতালি থেকে বাংলাদেশে এনে মোংলায় সমাহিত করা হয়।