মিনেসোটায় ইতিহাস রচনাকারি দুই বাংলাদেশি কাউন্সিলওম্যান

0

মিনেসোটা স্টেটে ডুলুট সিটি কাউন্সিলে প্রথম মুসলমান এবং প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান তথা প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে আজরিন আওয়াল বিজয় অর্জনের ঠিক এক বছর পর মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান অরিন চৌধুরী। বাঙালি এবং নতুন প্রজন্মের অবিস্মরণীয় উত্থানের ঘটনাবলিতে আপ্লুত কঠোর পরিশ্রমী প্রবাসীরা। 

উল্লেখ্য, এ সময়ে জর্জিয়া স্টেটে দুই সিনেটর, নিউ হ্যামশায়ারে স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ, কানেকটিকাটে স্টেট সিনেটর, মিলবোর্ন সিটির মেয়রসহ সকল কাউন্সিলম্যান, মিশিগানের হ্যামট্রমিক সিটির প্রো-টেম মেয়রসহ ৪ কাউন্সিলম্যান, নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলমান ও প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান হিসেবে শাহানা হানিফ দ্বিতীয় মেয়াদে অধিষ্ঠিত হলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হিসেবে। আরেক বৃহৎ সিটি ফিলাডেলফিয়ার কাউন্সিলওম্যান অ্যাট লার্জ হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. নীনা আহমেদ। নিউজার্সির প্যাটারসন সিটিতেও দু’জন রয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান। এই স্টেটের ফ্রাঙ্কলিন সিটি ও প্লেইন্সবরো সিটিতে রয়েছেন আরও দুই বাংলাদেশি আমেরিকান। নিউইয়র্কের হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যানের ৪ জনই বাংলাদেশি। 

অরিন চৌধুরী ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিনেসোটার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি থেকে চার বছরের ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার বিষয় ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তার বাবা স্থানীয় হাসপাতালে কর্মরত ড. আহসান চৌধুরী এবং মা রুবা হোসেন, কমকাস্ট ক্যাবল কোম্পানির ম্যানেজার। তার ছোট এক ভাই ও এক বোন রয়েছেন। তারা দুজনেই মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার স্বজনরা আশা করেন, কাউন্সিলওম্যান হিসেবে অরিন খুব ভালো করবেন এবং ভবিষ্যতে একজন নারী কংগ্রেসম্যান হিসেবে স্থানীয়দের সেবা করার সুযোগ পাবেন।

এই সিটির নিকটেই অবস্থিত ডুলুট সিটি কাউন্সিলেও গত বছর আরেক বাংলাদেশি আমেরিকান আজরিন আওয়াল (২৬) প্রথম বাংলাদেশি এবং প্রথম এশিয়ান আমেরিকান মুসলমান হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। সেই সিটির ৮৮% বাসিন্দা হলেন শ্বেতাঙ্গ। ১০% কৃষ্ণাঙ্গ এবং বাদামি। ৩% হলেন অভিবাসী। এমনি একটি সিটিতে নিজের অবস্থানকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে এগিয়ে নিতে আজরিনকে নিবেদিত হতে হয়েছে অর্থাৎ বাসিন্দার সকলেই তাকে নিজেদের একজন হিসেবে বিবেচনা করছেন। ৩১% ভোট পেতে হয় এই বিজয়ে। এলাকার অস্বচ্ছ্বল লোকজনের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আপসহীন আজরিন করোনাকালে রান্না করা খাবার বিতরণও করেছেন লকডাউনে থাকা মানুষের মধ্যে। করোনা পরবর্তী সংকটেও ছিলেন সরব। আজরিনের মা-বাবা অভিবাসনের মর্যাদা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর এই সিটির ম্যাপেল গ্রোভ এলাকায় কাবাব অ্যান্ড ক্বারি রেস্টুরেন্ট দিয়েছিলেন। ২০০৮ সালের মন্দার কবলে পড়ে সেটি হাতছাড়া হয়। আজরিন ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা-ডুলুট ক্যাম্পাসে পড়েছেন। এই সিটিকে আপন করে নিয়েছেন এবং এখানেই রাজনৈতিক ভিত্তি গড়লেন-যা তাকে নিয়ে যাবে অনেক উঁচুতে-এমন প্রত্যাশা আজরিনের শুভার্থী তথা প্রবাসীদের। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here