মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে অসুস্থ সন্তানকে হত্যার অভিযোগে নেত্রকোনায় বৈশাখী নামে এক গৃহবধূকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে শহরের পারলা এলাকা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে আসে মডেল থানার পুলিশ।
এর আগে সকালে নেত্রকোনা পৌর এলাকার পুকুরিয়া বেগুনপাড়া একটি কালভার্টের নিচ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে শনিবার শিশুটির মায়ের জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন মডেল থানার ওসি লুৎফুল হক।
গত কয়েকদিন পূর্বে শিশুটিকে তার চাচা উৎপল পন্ডিতের বাসা ময়মনসিংহে নিয়ে যায় চিকিৎসা করাতে। সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার শিশুকে তার মা নিয়ে আসেন। এরপর আর খোঁজ না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে শুক্রবার শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে বৈশাখী তার ভাইয়ের কাছে ফোন দিয়ে জানায় ছেলেকে মেরে ফেলেছে এখন সে নিজেও মারা যাবে। এমন খবর পেয়ে শিশুর চাচা-বাবা-দাদা-দাদি নেত্রকোনা থানায় চলে আসে। অন্যদিকে পুলিশ গিয়ে রাতে ১২টার দিকে পারলা থেকে মাকে আটক করে।
এ ব্যাপারে বৈশাখী জানায়, তার এই শিশু সন্তান নিয়ে সকলেই নানা মন্তব্য করে আসছিল। জন্ম থেকে অসুস্থ হওয়ায় নানা কথা শুনে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই কারণেই বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ থেকে ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন। পরে ঘুরতে ঘুরতে পুকুরিয়া চলে যান। সেখানে অটোর ধাক্কায় কোল থেকে ছেলে পড়ে গেলে তিনি অটোর পেছনে দৌড়ে গিয়ে আর ছেলেকে পাননি বলে জানান।
এদিকে শিশুর বাবা স্বদেশ পন্ডিত জানায়, কোনো গালিগালাজ করেনি। ছেলে অসুস্থ তাই ঠিকমতো ওষুধ খাইয়েছে কিনা এসব নিয়েই বলতেন। চাচা উৎপল পন্ডিত জানায়, তার কাছেই ছেলেটি ছিল। তিনিই চিকিৎসা করছিলেন। ছেলের পায়খান প্রস্রাব পরিষ্কার করতে কষ্ট হয়, তাই তার মা এই কাজ করেছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক জানান, প্রাথমিকভাবে পরিবারের তথ্য অনুযায়ী নিশ্চিত হওয়া গেছে মা এই কাজ করেছে। এ ব্যাপারে আদালতে জবানবন্দি নেওয়া হলে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।