মাদারীপুরে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বানর

0

একসময় মাদারীপুরের চরমুগরিয়া এবং কুলপদ্বী এলাকায় ঝোপঝাড় ছিল। সেখানেই ছিল বানরের অবাধ বিচরণ। তবে সম্প্রতি পুরো জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে বানর। স্থানীয়দের দাবি, বানরের খাদ্য সংকট থাকার কারণে বেড়েছে বানরের উৎপাত। সুযোগ পেলেই বাসাবাড়িতে ঢুকে রান্না করা খাবার এমনকি কাঁচা সবজি নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে।

একসময় বন-জঙ্গলের ফলফলাদি খেয়েই বেঁচে থাকতো বানরগুলো। বর্তমানে বন-জঙ্গল কেটে ফেলায় দেখা দিয়েছে বানরের খাদ্য সংকট। খাবার না পেয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এই প্রাণীগুলো হুমকির মধ্যে পড়েছে। তাই ভারসাম্য রক্ষায় বানরগুলোকে নিরাপদ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা।

মাদারীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার শিশু রুহানি আক্তার (৬) নামে এক শিশুকে বানর অতর্কিতভাবে কামড়িয়ে পায়ের মাংস ছিঁড়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে রুহানীর মা কুমকুম বেগম (৩০) বলেন, আমার শিশু বাচ্চা এখন একা ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। খেলতে ও স্কুলে যেতে চায় না। ভয়ে বাইরে বের হওয়া অনিরাপদ।

স্থানীয়রা জানায়, সরকারিভাবে বানরের জন্য খাবার বরাদ্দ থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। একটা সময় বানরের অভয়ারণ্য হিসেবে চরমুগরিয়া এলাকা পরিচিত ছিল। একদিকে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে ঘনবসতি দুই কারণেই বানরের সংখ্যা কমে গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ প্রাণীকে টিকিয়ে রাখার আহ্বান এলাকাবাসীর।

চরমুগরিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বানর সারাক্ষণ উৎপাত করে। প্রতিনিয়তই বাসা-বাড়ি ও দোকানে খাবারের জন্য বানর হানা দেয়। এ ছাড়া গাছের ফল সবজি খেয়ে ফেলে ও নষ্ট করে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকার বাসিন্দা শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বানরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। তাদের উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারের পদক্ষেপ দরকার।

মাদারীপুরের বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বরাদ্দ কম থাকায় বিভিন্ন স্পটে মাসে ১২ দিন খাবার দেওয়া হচ্ছে। মাদারীপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আট হাজার বানর থাকলেও বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজারে। চলতি অর্থবছরে বানরের জন্য ২৭ লাখ টাকা খাবারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, কী কারণে বানরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here