মাদারীপুরে চিকিৎসায় অবহেলায় এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে শহরের পানিছত্র এলাকার কে আই হাসপাতালে।
মারা যাওয়া ওই নারীর নাম শারমীন বেগম (৩০)। তিনি সদর উপজেলার ছিলারচর এলাকার আনোয়ার খালাসির স্বামী ও একই কালিকাপুর এলাকার নূর মোহাম্মদ খানের মেয়ে। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই রোগীর স্বজনদের সঙ্গে একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে হাসপাতালটি সামনের গ্লাস ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও অভ্যর্থনা কক্ষে ভাঙচুর চালায়। এরপরই ঘটনার বিচার দাবিতে হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন স্বজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শারমীনের স্বামী আনোয়ার খালাসী বলেন, ‘পপুলার হাসপাতালে আমার স্ত্রী সিজার করে সাইয়েদা সিদ্দিকা এলিজা। তার ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রী গত ৭ দিন ধরেই ব্যথায় ভুগছিল। তার সঙ্গে ব্যথার বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করলে তিনি আমার স্ত্রীকে কে.আই হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। তার কথামত আমি হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে হঠাৎ শুনি আমার স্ত্রী আর জীবিত নাই। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, পিঠের ব্যথায় আমার স্ত্রী মারে নাই। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে আমার স্ত্রীকে মরতে হইছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে কে আই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আমি ওই রোগীর বিষয়ে কিছুই জানি না। হাসপাতাল কেন তারা ভাঙচুর চালালও, তাও জানি না। তবে চিকিৎকের কোনো ভুল নেই। তিনি তার সঠিক চিকিৎসাই দিয়েছেন।’
পপুলার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির হোসেন বলেন, প্রথম সিজার আমাদের এখানে হলেও রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে। এরপর নাকি অন্য হাসপাতালে রোগী মারা গেছে। আমরা তেমন কিছু জানি না।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রোগীর স্বজনদের বুঝিয়ে বলেছি, তারা লাশটি আমাদের কাছে দিয়েছেন। আমরা ওই নারীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। স্বজনদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে, তারা অভিযোগ দিলে পুলিশ চিকিৎসক ও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।’