মসলার ঘাটতি পূরণে বগুড়ায় জিরা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা

0

বগুড়ায় মসলার ঘাটতি পূরণে জিরা চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। শিবগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে সফলতা পাওয়ায় এখন উপজেলাজুড়ে আবাদ শুরু করেছেন তারা। এর আগে কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রদর্শনীর মাধ্যমে সর্বপ্রথম এ এলাকায় স্বল্প পরিসরে জিরার চাষ করেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী আকারে জিরার চাষাবাদ শুরু হয় এ উপজেলায়। এখন শুধু গবেষণাগারেই নয়, কৃষক পর্যায়ে আগ্রহ বেড়েছে জিরা চাষে। এতে করে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। আয় বাড়বে কৃষকের। কমবে আমদানি নির্ভরতা।

জানা যায়, মসলা জাতীয় ফসলের মাঝে জিরা অন্যতম। জিরা শীতকালীন মসলা জাতীয় ফসল। দেশে যে পরিমাণ জিরার চাহিদা তার সম্পূর্ণটাই আমদানির উপর নির্ভর করে। আমাদের দেশে প্রতি বছর জিরার চাহিদা থাকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। অনেক গবেষণার ফলে মসলা গবেষণা কেন্দ্রর বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ দেশে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের উপযোগী জিরার জাত আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। 

বারি জিরা-১ নামের জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ২০২২ সালে অনুমোদিত হয়। এ জাতের জিরার গাছ লম্বা ও ঝোপালো। উচ্চতা প্রায় ৪০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার। গাছের পাতার রং গাঢ় সবুজ। ফুলের রং গোলাপী। কৃষক পর্যায়ে চাষ উপযোগী জিরার গাছ বেঁচে থাকে ১০০ থেকে ১১০ দিন পর্যন্ত। এ জাতের জিরা বাজারে প্রাপ্ত জিরা অপেক্ষা অধিক সুগন্ধি। আর হেক্টর প্রতি ফলন ৫৫০ থেকে ৬০০ কেজি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের অর্থায়নে প্রদর্শনী আকারে কৃষক পর্যায়ে সফল চাষাবাদ সম্পূর্ণ হয়েছে এ জাতের জিরা। শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জিরা চাষ হচ্ছে। 

উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে কৃষক সাইফুল ইসলাম তার চাষকৃত ২০ শতাংশ জমিতে বারি জিরা-১ জাতের জিরা চাষ করেছেন। তিনি জিরার ফসল কাটতে শুরু করেছেন। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ভরপুর জিরা। 

তিনি বলেন, সফল ভাবে জিরা চাষ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। জিরা গাছগুলো উঠিয়ে রোদে শুকানো পর জিরা মাড়াই করা হবে। আশা করছি প্রতি শতকে প্রায় ২ কেজি জিরা পাওয়া যাবে। এখান থেকে যে জিরা পাওয়া যাবে তা বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এদিকে জিরার এমন ফলন দেখে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। সফলতার মুখ দেখবেন এমন আশা করছেন তারা।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, উপজেলায় মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি স¤প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী আকারে জিরার চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছর জিরার চাষাবাদ স্বল্প পরিসরে হলেও চলতি বছরে চাষাবাদ বেড়েছে। কৃষক পর্যায়ে ভালো ফলন পেলে আগামী দিনে চাষাবাদ আরো বাড়বে। জিরা চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here