মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রণাঙ্গন ইয়েমেন, মুখোমুখি সৌদি-আমিরাত?

0
মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রণাঙ্গন ইয়েমেন, মুখোমুখি সৌদি-আমিরাত?

ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও দীর্ঘদিনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আবারও নাটকীয় মোড়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সব বাহিনীকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেন ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিল। 

আজ মঙ্গলবার জরুরি ডিক্রিতে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বিদ্যমান দীর্ঘদিনের যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তিও আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে সারা দেশে ৯০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে সব ধরনের সীমান্ত পারাপারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল বা এসটিসির সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতাকে কেন্দ্র করেই এই চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ইয়েমেনে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে অনড় এসটিসি গত কয়েক সপ্তাহে দেশটির বিশাল এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। যার ফলে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সরাসরি সংঘর্ষ শুরু হয়। বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে হাদরামাউত এবং আল-মাহরা প্রদেশের দখল নেওয়ার ঘটনাকে রাশাদ আল-আলিমি ‘অগ্রহণযোগ্য বিদ্রোহ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এসটিসিকে অবিলম্বে দখল করা এলাকাগুলো সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

এই সংকটকালীন মুহূর্তে সৌদি আরব ইয়েমেনের এই কঠোর অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের উচিত ইয়েমেনের এই আদেশের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়ে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করা। কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সামরিক বা আর্থিক সহায়তা দেওয়া থেকে বিরত থাকা। সৌদি কর্তৃপক্ষ আরও অভিযোগ করেছে, আরব আমিরাতের মদতে এসটিসি বাহিনী সৌদি আরবের দক্ষিণ সীমান্তের কাছে উসকানিমূলক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। এর আগে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট মুকাল্লা বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ বন্দর থেকে আসা দুটি সন্দেহভাজন জাহাজ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খালাসের সময় সেখানে হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করেছে।

বর্তমানে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল মূলত ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরোধী বিভিন্ন ছোট-বড় দলের একটি মিশ্র জোট। যার মধ্যে এসটিসি-র সদস্যরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও আঞ্চলিক আধিপত্য নিয়ে নিজেদের মধ্যকার এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন দেশটিকে নতুন করে অনিশ্চিত সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ২০১৪ সালে হুথি রাজধানী সানা দখল করার পর থেকেই ইয়েমেনে অস্থিতিশীলতা শুরু হয়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here