রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।
তাদের বাড়ি সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে। তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানি স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকাণ্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবার ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবারের আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।