জমিতে ভালো উৎপাদনেও মলিন কুমিল্লার কৃষকদের মুখ। বিশেষ করে মূলা, ফুলকপি ও বাঁধা কপির দাম কমায় মন খারাপ কৃষকদের। অর্থনৈতিকভাব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আগামী মৌসুমে সবজি চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এর প্রভাব পড়তে পারে বাজারে। বাড়তে পারে সবজির মূল্য। সচেতনদের দাবি সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় কৃষক ও ভোক্তা উভয় পক্ষ লাভবান হতে পারেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বরুড়া উপজেলার নরিন্দ গ্রাম। গ্রামের মাঠে হাসছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। জমিতে থোকায় থোকায় ফুলকপি। যেন ফুল হাতে তার প্রিয়তমার জন্য অপেক্ষা। কিন্তু প্রিয়তমা ব্যবসায়ী বা ক্রেতা কারো আগ্রহ নেই সবজি নিয়ে। সেখানে কথা হয় কয়েকজন কৃষকের সাথে।
কৃষক আমির হোসেন বলেন,তাদের পরিবার ৩২শতক জমিতে ফুলকপির চাষ করেছে। তাদের খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকার মতো। মাঠে ফসল থাকলেও ক্রেতার তেমন আগ্রহ নেই। ভাড়া দিয়ে বাজারে নেয়া হলে বড় সাইজের কপির দাম উঠছে জোড়া ২০টাকা। আগামীবার তিনি সবজি চাষ করবেন না।
মোখলেছুর রহমান বলেন,বরুড়ার রাম মোহন, মুগুজী, সরাফতি ও নরিন্দসহ আশপাশের গ্রামে সবজির চাষ হয়। সার ও বীজের দাম বেশি। বাজারে কৃষকরা ফসলের ভালো দাম পাচ্ছেন না। এতে তারা হতাশ। আগামীতে তারা চাষ থেকে সরে আসলে আবার দাম বেড়ে যাবে, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃষি সংগঠক মতিন সৈকত বলেন,সবজির দাম খুব কমে গেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। একস্থানে দাম কমে গেলে অন্য স্থানে ট্রেনসহ বিভিন্ন পরিবহনে ভুর্তকী দিয়ে কৃষি পণ্য পাঠানো যেতে পারে।’এছাড়া সবজির সংরক্ষণাগার করা যেতে পারে। কখন কোন সবজি চাষ করবে তা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। অপরদিকে একই সবজি বেশি জমিতে না করলে কৃষক কম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার ভুইয়া বলেন,এই এলাকায় ৭হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে সময় মতো কৃষক সবজি চাষ শুরু করতে পারেননি। তাই শেষ দিকে চাষ করায় দাম কম পাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, কিছুদিন আগে সবজির দাম বেশি ছিল। তাই কৃষকরা বেশি সবজি চাষ করেছেন। আমরা পরামর্শ ও প্রণোদনা দিয়েছি। এতে উৎপাদন বেড়েছে। এটা ভালো খবর। তবে খারাপ খবর হচ্ছে এখন দাম কম পাচ্ছেন। আশা করি এই বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর পরিকল্পনা করছেন।