ভারতের সিকিমে তীব্র জলোচ্ছ্বাস; ভেসে গেল সেনাবাহিনীর গাড়ি

0

উত্তর পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে থেকে টানা বর্ষণ শুরু হয়। তার ফলে উত্তর সিকিমের মঙ্গান জেলার লোনাক লেকে ফাটল দেখা দেয়। এর কারণে তিস্তা নদীতে আচমকা পানির স্তর বেড়ে যায়। পানির স্তর বাড়ে ১৫ থেকে ২০ ফুট। প্রবল স্রোতের টানে ভেসে গেছে একাধিক ঘর, গাড়ি, গাছপালা। সিকিম থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে চুংথাম এলাকা।

কালিম্পং’এ ভেসে গেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বেশ কয়েকটি ভিডিও সামনে এসেছে, সেখানেই প্রকৃতির ভয়াল রূপ দেখা গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক সেনা ছাউনি। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, তাদের ২৩ জন সেনার খোঁজ মিলছে না। জানা গেছে, তিস্তা নদীর পাশেই ছিল একটি সেনা ছাউনি, সেটি হঠাৎ করে পানির তোড়ে ভেসে যায়। নিখোঁজ ২৩ জনই ওই সেনা ছাউনির জওয়ান। পানিতে ভেসে যায় সেনাবাহিনীর আরও একাধিক গাড়ি। এছাড়াও একাধিক স্থানীয় নাগরিকরাও রয়েছেন বলে খবরে বের হয়েছে। সব মিলিয়ে নিখোঁজের সংখ্যা ৪৩ জন। 

সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ২৩ জন জওয়ানের নিখোঁজ থাকার খবরে উদ্যোগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই সাথে উদ্ধারকাজে সিকিম সরকারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইট করে তিনি লেখেন ‘সিকিমে একটি আকস্মিক মেঘ বিস্ফোরণ ও তার পর বন্যার কারণে ২৩ জন সৈন্য নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বিষয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করছি এবং সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় রোধে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যেই আমি মুখ্য সচিবকে বলেছি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সব ধরনের প্রস্তুতির ব্যাপারে সমন্বয় সাধন করতে। কালিম্পং, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ তদারকির জন্য রাজ্যের সিনিয়র মন্ত্রী এবং সিনিয়র আইএএস অফিসারদের উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্যোগে যাতে প্রাণহানি না হয় সেজন্য কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে।’ 

পরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মমতা বলেন ইতিমধ্যেই তিস্তার পানিতে তিনজনের লাশ ভেসে এসেছে। সেগুলো নিখোঁজ জওয়ানের হতে পারে। এখনো শনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে সেনার তরফেও এখনও কিছু জানানো হয়নি।

সেনাবাহিনীর গুয়াহাটির ফ্রান্টিয়ারের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তর সিকিমের সিংটামের কাছে লোনাক লেকে মেঘ বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে নিখোঁজ ২৩ জন জওয়ানের এখনও কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পি.এস তামাং গোলে’ এর সাথে কথা বলে খোঁজ খবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here