ভারতের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। এমন পরিস্থিতির জন্য ইসলামাবাদ পূর্ণ সতর্ক অবস্থায় আছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
সামা টিভিতে দেয়া সাক্ষাতকারে ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান কোনোভাবেই ভারতকে বিশ্বাস করতে পারে না। ভারত আবারও সীমান্ত পেরিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই ভারতকে উপেক্ষা করছি না, না কোনো অবস্থাতে ওদের ওপর আস্থা রাখছি। আমার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ বা কোনো ধরনের শত্রুতামূলক কৌশলের সম্ভাবনাকে আমি বাতিল করতে পারি না। সীমান্তে আগ্রাসন হোক বা অন্য কোনো হামলা (আফগান সীমান্তের অস্থিরতা)। আমাদের অবশ্যই সর্বক্ষণ সতর্ক থাকতে হবে।
অপারেশন সিন্দুরকে ‘৮৮ ঘণ্টার ট্রেলার’ হিসেবে অভিহিত করে ভারতীয় সেনাপ্রধানের মন্তব্যের কয়েকদিন পর পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এসব কথা বললেন। খাজা আসিফ বলেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, চীন এবং অন্যান্য রাষ্ট্র চায় পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ বন্ধ হোক। আফগানিস্তান সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা দিন দিন আরও তিক্ত রূপ নিচ্ছে। আর এরমধ্যেই যুক্ত হয়েছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা। ইসলামাবাদ বারবার দাবি করে আসছে যে, নয়াদিল্লির নির্দেশনায় কাবুল সীমান্তযুদ্ধে জড়িয়েছে।
সামা টিভিকে খাজা আসিফ আরও বলেন, ভারত চায় না পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘাতের সমাধান হোক। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, পাকিস্তান এখন দুই ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হতে পারে। আফগানিস্তান পাকিস্তানের উত্তেজনার পেছনে রয়েছে ভারতের উসকানি।
এরমধ্যেই, মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেয়া ইউএস–চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, মে মাসের চার দিনের সংঘাতে চীনের সরবরাহ করা অস্ত্রের সহায়তায় সামরিক সফলতা অর্জন করে পাকিস্তান।
রিপোর্টে বলা হয়, চীন ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ৮২ শতাংশ অস্ত্র সরবরাহ করেছে এবং ২০২৫ সালে সামরিক সহযোগিতা আরও বিস্তৃত করেছে।
এদিকে আবারও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধের দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প এও দাবি করেন যে, দুই দেশের মধ্যে শুরু হতে যাওয়া আরেকটি যুদ্ধ থামিয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতারা বর্তমান সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, নরেন্দ্র মোদি কেন ট্রাম্পকে এমন মন্তব্য করা থেকে ঠেকাতে পারছেন না। নয়াদিল্লি বারবার এই অস্বীকার করলেও ট্রাম্পের বক্তব্য ৬০ বার পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের।

