স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ ছয় ধরণের পন্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে রপ্তানি ব্যবসার অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে হুমকির মুখে পড়বে রপ্তানি কার্যক্রম।
জানা গেছে, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের ছয় ধরণের পন্য আমদানি বিষয়ের নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে ভারত। এর মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় ও কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা ও সুতার উপজাত এবং আসবাবপত্র স্থলবন্দর রপ্তানি করা যাবে না। নিষিদ্ধ করা পন্যের মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের আসবাবপত্র ছাড়া বাদবাকি সকল ধরণের পন্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি করা হয়।
সোমবার (১৯ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি গাড়িতে ৩৭ মেট্রিক টন বরফায়ীত মাছ, ৭টি গাড়িতে ৮৬ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল ও এক গাড়িতে ১৯ মেট্রিক টন পাটজাত দ্রব্য ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় রপ্তানি হয়। আগে যেখানে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে রপ্তানিমুখী গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকত। গতকাল সেখানে মাত্র তিন আইটেমের ১৬টি গাড়ি ব্যাতিত অন্য কোন গাড়ি চোখে পড়েনি। এসময় স্থল শুল্ক স্টেশন, বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারির, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান বলেন, দুই একটি পণ্য বাদে সব’কটি পন্য এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভারত সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের সবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়েছে। সবাই দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন আগে ট্রানশিপমেন্ট বন্ধ করেছে। এখন মাছ, পাথর ও তেল বাদে বাকি সব পন্য বন্ধ করেছে ভারত সরকার। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিশাল লোকসানের দিকে ধাবিত হব।
মিতু এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী ও আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসােসিয়েশেনের সহসভাপতি নিছার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমদানি-রপ্তানি বন্ধের ভারতের এই প্রজ্ঞাপনের কারণে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। যে কয়েকটি পন্য আছে সেগুলো সুচারু রূপে চালু হলে কিছুটা হলেও অন্তত দাঁড়ানো যাবে। অন্যথায় সিএন্ডএফ এজেন্টের কাস্টমস, শ্রমিক, আমদানি-রপ্তানিকারক আমরা সবাই ক্ষতি সম্মুখীন হব।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রতিদিন ৪০-৫০গাড়ি রপ্তানি হতো। ভারতীয় নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি কমে গেছে। এখন মাছ, সিমেন্ট ও শুটকি মাছ রপ্তানি হচ্ছে। আজ অনেক গাড়ি আসেনি। স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল মাছ, ভোজ্য তেল ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি হয়েছে।
প্রঙ্গত, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও শতভাগ রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন বরফায়ীত মাছ, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, প্লাস্টিক, বর্জ তুলা ও খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় যায়। সেখান থেকে রপ্তানিকৃত পণ্য সরবরাহ করা হয় দেশটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে।