ভারতের কট্টর খালিস্তানপন্থি নেতা অমৃতপাল সিং আত্মসমর্পণ করেছেন। এক মাসেরও বেশি আগে তাকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু হয়েছিল পুলিশ। এর আগে একাধিকবার তিনি গ্রেফতারি এড়িয়েছেন। পাঁচ সপ্তাহের অভিযান শেষে অমৃতপাল সিংকে আত্মসমর্পণকে বাধ্য করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
রবিবার কর্মকর্তারা বলেছেন, দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। পাঞ্জাবের মোগা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শিখরা পাঞ্জাবের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ।
পাঞ্জাব রাজ্য পুলিশ একটি টুইটে জানিয়েছে, ‘(আমরা) নাগরিকদের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাই। কোনও ভুয়া খবর শেয়ার করবেন না। সবসময় খবর খতিয়ে দেখে শেয়ার করুন।’
স্থানীয় গণমাধ্যম পুলিশি সূত্রের উল্লেখ করে জানিয়েছে, রবিবার ভোরে অমৃতপাল আত্মসমর্পণ করেছেন। শিখ ধর্মীয় নেতা, যশবীর সিং রোড্ডেও বলেন, ২৯ বছরের এই তরুণ মোগায় একটি গুরুদ্বারে সকালের প্রার্থনা করার পর আত্মসমর্পণ করেন।
অমৃতপাল এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভারতে অশান্তি ছড়ানো, খুনের চেষ্টা, পুলিশ কর্মীদের আক্রমণ এবং তাদের দায়িত্বে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
খালিস্তানি আন্দোলন কি?
তরুণ এই বিচ্ছিন্নতাবাদী চলতি বছরের শুরুর দিকে খালিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করে উত্তেজক বক্তৃতা দিয়ে সবার নজরে আসেন। খালিস্তানপন্থিদের দাবি, ভারতীয় ভূখণ্ডে একটি প্রস্তাবিত সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র তৈরি করা।
খালিস্তানপন্থি আন্দোলন ১৯৮০ সাল নাগাদ প্রচার পেয়েছিল। খালিস্তানের দাবিতে রক্তঝরা আন্দোলন আগেও দেখেছে পাঞ্জাব। সেই সময় খালিস্তানি নেতা ভিন্দ্রানওয়ালের বিরুদ্ধেও সরকারের সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। গোঁড়া এবং রক্ষণশীল শিখনেতা হিসেবে পরিচিত ভিন্দ্রানওয়ালে সে সময় গোটা পাঞ্জাবের ‘আতঙ্কের কারণ’ হয়ে উঠেছিলেন।
শিখ সন্ত্রাসী এই নেতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালেকে বন্দি করার জন্য শিখদের পবিত্রতম স্থান স্বর্ণ মন্দিরে ভারতীয় সেনারা ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ অভিযান চালায়। সেনা অভিযানের পর ভিন্দ্রানওয়ালে মুক্ত হয় শিখদের পবিত্র তীর্থ স্বর্ণমন্দির।
যদিও ‘সার্জিকাল অ্যাটাকের’ সময়ভারতীয় সেনারা ভিন্দ্রানওয়ালের সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল। ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন। সহিংসতা বাড়তে থাকে। সেই সময় ভারতজুড়ে শিখদের হত্যার অভিযোগ ওঠে।
এই ভিন্দ্রানওয়ালেই তার অনুপ্রেরণা, এমনটাই দাবি করেন অমৃতপাল সিং।