ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এইচ ওয়ান বি ভিসায় জালিয়াতি ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কূটনীতিক মাহভাশ সিদ্দিকি। তাঁর দাবি, অযোগ্য আবেদনকারীরা ভুয়া কাগজপত্র ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভিসা পাচ্ছেন এবং মার্কিন দক্ষ কর্মীদের চাকরি দখল করছেন। তিনি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এইচ ওয়ান বি ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার আহ্বান জানান।
অ্যান্টি ইমিগ্রেশন থিংকট্যাংক সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজে লেখা এক নিবন্ধে তিনি জানান, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চেন্নাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কাজ করার সময় তিনি ব্যাপক জালিয়াতির প্রমাণ পান। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, তখন চেন্নাই কনস্যুলেটে বছরে এক লাখ আবেদন জমা পড়ত, এখন তা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং অঞ্চলটি ভিসা জালিয়াতির ‘বিশ্ব রাজধানী’তে পরিণত হয়েছে।
মাহভাশ সিদ্দিকি অভিযোগ করেন, অধিকাংশ আবেদনকারী কম্পিউটার সায়েন্সের ডিগ্রি থাকলেও মৌলিক কোডিং জ্ঞানও জানেন না। তাঁর দাবি, হায়দরাবাদের আমিরপেট এলাকায় জাল ডিগ্রি, ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট, নকল ম্যারেজ সার্টিফিকেট তৈরির একটি বড় শিল্প গড়ে উঠেছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয় দেশের দুর্নীতিতে জড়িত এইচ আর কর্মকর্তারা জাল চাকরির চিঠি তৈরিতে সহায়তা করেন। তাঁর মতে, এটি একটি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড সিস্টেম’, যা মার্কিন কর্মীদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারের কারণে মার্কিন আইটি গ্র্যাজুয়েটরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং তাদের স্থানে কম দক্ষ এইচ ওয়ান বি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
সিলিকন ভ্যালির শীর্ষ নির্বাহী এবং ভারতীয় লবিস্টদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, মার্কিন কর্মীদের অদক্ষ হিসেবে তুলে ধরতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার চালানো হচ্ছে এবং কংগ্রেস বিভ্রান্ত হচ্ছে ভুল তথ্যের মাধ্যমে।
শুধু আইটি নয়, চিকিৎসা খাতেও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর মতে, ভারতের অনেক মেডিকেল গ্র্যাজুয়েট কোটা বা ঘুষের মাধ্যমে ভর্তি হয়ে জে ওয়ান ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং তারা মার্কিন চিকিৎসকদের তুলনায় নিম্নমানের দক্ষতা নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেন।
সমস্যা সমাধানে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। যেমন নতুন এইচ ওয়ান বি ভিসা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা, ডিগ্রি ও দক্ষতার গভীর যাচাই, পর্যাপ্ত মার্কিন কর্মী থাকলে বিদেশি নিয়োগ বন্ধ রাখা এবং জালিয়াতি ধরা পড়লে জরিমানা ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
সোর্স: ইন্ডিয়া টুডে

