ব্যবসায়ী মানেই যেন অপরাধী!

0

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে আজাদ বলেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নীতিনির্ধারকদের প্রোডাক্ট কস্ট অ্যানালাইসিস করা দরকার। কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না আমরা। ব্যবসায়ী হওয়া মানেই যেন আমি একজন অপরাধী। সবাই চুষে খায়। এ জন্যই নতুন কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। সব সরকারের চরিত্র এক। সরকার যে নীতি নিচ্ছে এগুলো বাস্তবায়িত হলে আমরা কোথায় যাব? গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির আগে অর্থনীতি ও জনজীবনে এর কী প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখা হয়নি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো আলোচনাও করা হয়নি।

গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনাতনে আয়োজিত ইনভেস্টমেন্ট প্রোসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান, এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, লাফার্ম সুরমা সিমেন্টের সিইও ইকবাল হোসাইন চৌধুরী। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায়, সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠানের শুরুতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ার রহমান।

এ কে আজাদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি- আমাদের পরিবর্তন সম্ভব। দেশ পরিবর্তন হতেই হবে। আজকের এই তরুণরাই সেই পরিবর্তন আনবেন। আমরা ভাবিনি কখনই যে এমন একটা আন্দোলনের মাধ্যমে এ ধরনের একটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু তাঁরা সেটা করে দেখিয়েছে। তরুণরা দেখিয়ে দিয়েছে, পরিবর্তন সম্ভব। দেশ পরিবর্তন হতেই হবে। এ জন্য সময় দরকার। বর্তমানে নেওয়া নীতিগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের চিত্র পাল্টে যাবে।’

প্রধান অতিথি হিসেবে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে দেখবেন সরকারকে আমরা ধীরে ধীরে অনেক ব্যবসা থেকে সরিয়ে আনব। সরকারের ব্যবসা করার দরকার নেই। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে আমরা তার গ্রাউন্ড তৈরি করে দেব। আমরা বড় কনজুমারের কাছে এই সম্পত্তিগুলো হস্তান্তর করব, তারা তাদের মতো করে ব্যবসা করবে। সেক্ষেত্রে আমাদের নতুন করে ইকোনমিক জোন না করে সেই জায়গাগুলোকেই ইকোনমিক জোন হিসেবে কাজে লাগানোর একটি বিকল্প সমাধান কাজ করবে।’

ডিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম খান বলেন, ‘সাপ্লাই চেইন ম্যাকানিজমে আমরা অনেক দুর্বল। আমি একজন বাংলাদেশি হিসেবে লিমিটেড ইনভেস্টমেন্টের সুযোগ পাচ্ছি। আমাদের পলিসি মেকাররা ফরেন এক্সচেঞ্জের বিষয়ে ন্যারো মাইনডেড। তাঁরা মনে করেন সব ব্যবসায়ী দেশ ছেড়ে চলে যাবেন টাকা নিয়ে। যারা যাওয়ার তারা চলে গেছেন, আমরা কিন্তু রয়ে গেছি। আমরা যাচ্ছি না কোথাও।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে সব খাত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ভেঙে দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে, যাতে টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়।’

এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে। তাদের এমন পরিবেশ দিতে হবে- যেন তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হন। নতুন উদ্যোক্তারা যদি কেউ ব্যবসা শুরু করতে চায় তার জন্য ইনস্যুরেন্স নেই। ফেইল করলে আর উঠে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। নতুনদের জন্য ট্যাক্স ভীতিকর এক অবস্থা। আমাদের উচিত তাদের জন্য বিষয়টি একটু রিলাক্স করা যায় কি না- তা নিয়ে ভাবা। নতুন ও ছোট ব্যবসা করার জন্য নতুনদের সুইটেবল পরিবেশ দেওয়া দরকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here