রংপুরে গত শনিবার রাতে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে ঘর-বাড়ি গাছ-পালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে ফসলেরও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। প্রায় প্রতিটি গাছের কিছু আম ঝরে পড়েছে। ফলে সোমবার সকালেই অনেকেই ঝুড়ি অথবা ডালিতে করে কাঁচা আম বিক্রি করতে আসেন রংপুর শহরে। অনেকে কাঁচা আমের স্বাদ নিতে, আবার কেউ আমের আচার করতে এসব আম কিনছেন।
জানা গেছে, হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম্রপালি, সাদা রচি, চোচা, আঁটিসহ হরেক প্রজাতির আম রয়েছে। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের চাহিদাই বেশি। একটি হাড়িভাঙ্গা আমের ওজন ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ফলে পাকা আমের মতো কাঁচা আমেরও কদর রয়েছে। আম পাকার আগে প্রতি বছর কমবেশি ঝড় কিংবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় এই অঞ্চল দিয়ে। ঝড়ে কাঁচা আম গাছ থেকে ঝরে যায়। ঝড়ে ঝরে পড়া আম স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজারে বিক্রি করে। অনেকে শখের বসে কাঁচা আমের ভর্তা খান। আবার কেউ কেউ আচার করেন। কেউ আবার ডালের সাথে কাঁচা আম খান। এবারের ঝড়-বাদলে কাঁচা আম বাজারে উঠেছে।
নগরীর কামাল কাছনা এলাকার গৃহিণী মনিরা ইসলাম বলেন, প্রতিবছর এই সময় কাঁচা আমের আচার তৈরি করে নিজেরা খাওয়ার পাশাপশি মেয়ে জামাইসহ আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে থাকি। তিনি গতকাল ৫ কেজি আম কিনেছেন প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে।
আম বিক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, তিনি পদাগঞ্জ এলাকা থেকে বাগানের মালিকদের কাছ থেকে আম কিনে শহরে বিক্রি করতে এসেছেন। তার মত অনেকেই শহরের পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে আম বিক্রি করছেন।
রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টরের জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে ১ হাজার ৯০০ হেক্টরে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ১০ মেট্রিক টনের মতো। এবার এমনিতেই আমের মুকুল অনেক দেরিতে এসেছে। এর মধ্যে ঝড়ে অধিকাংশ গাছের আম পড়ে গেছে। এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এমনটা মনে করছেন আম চাষিরা।