বয়স ৩৬ পেরিয়ে গেছে বেশ আগেই। এই বয়সে সাধারণত রিফ্লেক্স কমে আসে, কষ্ট করার তেষ্টা কমতে থাকে, ফিটনেসের ক্ষেত্রে আপোস করতে হয়। তবে পরিশ্রম আর নিবেদনের জায়গায় মুশফিকুর রহিম তো বরাবরই বাংলাদেশের ক্রিকেটে আলাদা ঘরানার। বিপিএল ফাইনাল ওঠার পর সেটি আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
এবারের বিপিএলে ফরচুন বরিশাল দলটিকে কেউ কেউ বলছিলেন ‘বুড়োদের দল।’ ৪২ বছর বয়সী শোয়েব মালিক খেলে গেছেন কদিন আগে। তবে মূলত দেশের তিন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার একসঙ্গে এক দলে বলেই বুড়োদের দলের তকমা দেওয়া হয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। ৩৬ বছর বয়সী মুশফিকের সঙ্গে ৩৫ ছুঁইছুঁই তামিম ইকবাল সঙ্গী এই দলে। দুইজনই অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে। দলের অভিজ্ঞ আরেক ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ অবসর নেনি এখনও। তবে তার বয়স ছাড়িয়ে গেছে ৩৮।
তিনি বলেন, “না ভাই, আমাকে অনুপ্রাণিত করে না (বুড়োদের দল শুনে)। আমার কাছে খারাপ লাগে। কারণ আপনি যদি এখনও অনেক তরুণ খেলোয়াড়কে আমার সামনে নেন, আমি অবশ্যই নিশ্চিত, আমার ফিটনেসের ধারেকাছেও তারা থাকতে পারবে না। আমি এটা লিখে দিতে পারি।”
বেশি বয়স মানেই যে ফিটনেসের ঘাটতি নয়, তা মনে করিয়ে দিলেন মুশফিক। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরলেন তিনি জিমি অ্যান্ডারসনকে। ৪১ বছর বয়সেও পেস বোলিংয়ে মাঠ মাতিয়ে চলেছেন টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার।
তিনি বলেন, “টপ ফিটনেসের মানদন্ড কিভাবে দেবেন? বয়স আর পারফরম্যান্সে… ? আমার মনে হয়, বয়স আর পারফরম্যান্সের চেয়ে সবচেয়ে ভালো হয় কারও ফিটনেস এবং পারফরম্যান্স কতটুকু…। বয়স স্রেফ একটা সংখ্যা। নাহলে জিমি অ্যান্ডারসনের মত ১৮৮ বা এরকম টেস্ট (১৮৭টি) খেলা খেলোয়াড় বিরল থাকত। এখনও সেটাই করে চলেছে সে, যেটা সবচেয়ে ভালো পারে।”
তবে মুখে জবাব দিলেও পারফরম্যান্সে কখনোই জবাব দেওয়ার ইচ্ছা মুশফিকের নেই। বরং দল সংশ্লিষ্টদের ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার ভাবনা থাকে তার। মুশফিক বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউকে প্রমাণ করার জন্য আমি খেলি না। আমাকে যারা দলে নিয়েছে, বিশেষ তামিমকে ধন্যবাদ এবং বরিশালের মালিকপক্ষকে, সেই বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে… যে কারণে তারা আমাকে নিয়েছে, আমি যেন তাদের সেটা ফিরিয়ে দিতে পারি পারফরম্যান্স দিয়ে।”