বেনিনে অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের দাবি একদল সৈন্যের

0
বেনিনে অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের দাবি একদল সৈন্যের

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালোনকে উৎখাত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনীর একাংশ।তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছে মিলিটারি কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন নামে।

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দখল নিয়ে, তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালনকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে এবং রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল দিয়ে তারা ঘোষণায় করেছে, প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালনকে অপসারণ এবং সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করা হয়েছে। তারা আরও বলেছে, দেশের সমস্ত সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে স্থগিত করা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ট্যালনের অবস্থান সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 
 
তবে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ট্যালন নিরাপদে আছেন এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, এদিকে বেনিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলুশেগুন আদজাদি বাকারি বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলুশেগুন আদজাদি বাকারির উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ এখনও প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুগত এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। বেনিনের এই অভ্যুত্থান চেষ্টা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আঞ্চলিক জোট ইকোওয়াসের সাবেক যোগাযোগ পরিচালক আদামা গেই। তিনি আল জাজিরাক বলেছেন, এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ‘কারও কাছে অবাক হওয়ার মতো নয়’।

তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, অনেক বিরোধী সদস্যকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। গেই বলেন, প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালন ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট বনি ইয়াইসহ বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি ইতিমধ্যেই তার বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে পরবর্তী নির্বাচনের পর ক্ষমতা গ্রহণের জন্য মনোনীত করেছেন। 

তুলা ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালন ২০১৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন। পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের এপ্রিলের নির্বাচনে তিনি ফের জয়লাভ করেন। নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটে ৮৬ শতাংশ ভোট পড়ে। কারচুপির অভিযোগে কয়েকটি বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করে।

২০২৬ সালের এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ট্যালনের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার কথা ছিল। তার জায়গায় দলের পছন্দের প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী রোমাল্ড ওয়াদাগনি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারে, এমনটা মনে করা হচ্ছে।  
 
অন্যদিকে ‘পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষক’ না থাকার কারণে নির্বাচন কমিশনে বিরোধী প্রার্থী রেনাউড আগবোডজোর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে দেশটির আইনসভা প্রেসিডেন্টের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করেছে।

তবে বেনিনের সরকার জানিয়েছে, অনুগত সৈন্য এবং জাতীয় রক্ষীরা নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে। অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রকারীরা কেবল রাষ্ট্রীয় টিভির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং কয়েক মিনিটের জন্য সিগন্যাল বন্ধ করে দিয়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here