সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদের জব্দ করা চারটি ফ্ল্যাটের শতাধিক ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, নিলামে মালামাল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকায় আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব সামগ্রী ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হয়েছে।
দুদক জানায়, আদালতের আদেশে গুলশানে অবস্থিত বেনজির আহমেদের চারটি বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে থাকা মালামাল জব্দ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ১৯টি ফ্রিজ, প্রায় ১০০টি এসি, আধুনিক আসবাবপত্র, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং শার্ট–প্যান্ট ও জুতাসহ ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী।
দুদকের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ফ্ল্যাটগুলোতে রক্ষিত পচনশীল মালামাল, ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কাপড়-চোপড়, রান্নাঘরের জিনিসপত্র ও কিছু মালামালের নমুনা রেখে বাকি সব সামগ্রী প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ভান্ডারে জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে চার মামলা করে দুদক। মামলায় বেনজীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। অনুসন্ধানে বেনজীর ও তার পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি বিও হিসাব খুঁজে পেয়ে আদালতের আদেশে সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করে দুদক।
গত ২৩ মে আদালতের আদেশে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
অন্যদিকে গত ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে ৪টি ফ্লাট জব্দের আদেশ দেন। ২৩ মে তাদের নামীয় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীরও ছিলেন।

