ভারতের বেঙ্গালুরু, মুম্বাই বা পুণের যানজটের কথা অনেকেরই জানা। কিন্তু খুব একটা পিছিয়ে নেই দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শহর কলকাতাও। দেশটির বড় শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি যানজটে হওয়ার নিরিখে কলকাতা সবার শীর্ষে। অর্থাৎ ধীরগতির শহরের তালিকায় ভারতের শহরগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে কলকাতা।
শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বে ধীর গতির শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা শহর। এক্ষেত্রে কলকাতার ঠিক আগেই রয়েছে কলম্বিয়ার ব্যারনকুইলা শহর, যে শহরে মানুষের বসবাস রয়েছে ১২ লাখের মতো। এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেঙ্গালুরু। ২০২৪ সালের টমটম ট্রাফিক ইন্ডেক্সের জরিপ অনুযায়ী ট্র্যাফিক জ্যাম বা যানজটের নিরিখে বেঙ্গালুরু, মুম্বাই ও পুণেকে ছাপিয়ে গেছে কলকাতা।
গোটা বিশ্বে ৬২ দেশের ৫০০টি শহরে এই জরিপ চালানো হয়। জরিপে সংশ্লিষ্ট শহরগুলিতে যানবাহনের গতিবেগ, যাত্রা পথের সময়, যানজট এবং এই বিষয়গুলি মানুষের উপর কি প্রভাব ফেলে- সেগুলি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। সেই রিপোর্টে প্রথম পাঁচটি শহরের মধ্যে রয়েছে ভারতের তিনটি শহর।
একটা সময় বছরের পর বছর ট্রাফিক জ্যমের নিরিখে শীর্ষস্থানে ছিল বেঙ্গালুরু শহর। ঘন্টার পর ঘন্টা সময় রাস্তাতেই কেটে যেত। কিন্তু এবার সেই স্থান দখল করেছে কলকাতা। জরিপ বলছে- এই তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা ব্যারনকুইলা শহরে গড়ে প্রতি ১০ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগে ৩৬ মিনিট ৬ সেকেন্ড।
কলকাতায় গড়ে প্রতি ১০ কিলোমিটার পথ যেতে ৩৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড সময় লাগে।বেঙ্গালুরুর ক্ষেত্রে গড়ে ওই পথ যেতে ৩৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় লাগে।
গোটা বিশ্বে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ধীরগতির শহরের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে পুণে, সেখানে গড়ে ১০ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগে ৩৩ মিনিট ২২ সেকেন্ড। পঞ্চম স্থানে রয়েছে লন্ডন। এই শহরে ওই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ৩৩ মিনিট ১৭ সেকেন্ড। আর এই যানজটের কারণে ব্যারনকুইলা শহরে গাড়ি নিয়ে চলাচলকারী এক ব্যক্তির বছরে ১৩০ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়, কলকাতায় ১১০ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়, বেঙ্গালুরুতে ১১৭ ঘন্টা, পুণেতে ১০৮ ঘন্টা সময় নষ্ট হয় এবং লন্ডনের সময় নষ্ট হয় ১১৩ ঘন্টা।
রিপোর্টে বলছে, যানজটের তীব্রতার জন্য কলকাতা শহর বিশ্বব্যাপী ১৬৯ তম স্থানে রয়েছে। এর অর্থ যানজটের মাত্রা বেশি থাকলেও, সেই অনুপাতে মূল্যবান সময় নষ্ট হওয়ার পরিমাণ কিছুটা কম। প্রধানত পরিকাঠামোর অভাবের কারণে কলকাতার রাস্তাগুলিতে যানজটে পরিণত হয়। পাশাপাশি অত্যধিক জনসংখ্যা ও ব্যস্ত সময়ে (পিক টাইমে) ট্রাফিকের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের অভাবের ফলে যানবাহনের গতি স্লথ হয়ে পড়ে।