রংপুর নগরীর বুড়িরহাট হটিকালচার সেন্টারে দেখা মিলল বিপন্ন প্রজাতির পুত্রঞ্জীব গাছের। এই গাছটি এখন বিরল প্রজাতির তালিকায় নাম লিখিয়েছে। কথিত রয়েছে এটি পুত্র সন্তানের দীর্ঘজীবন লাভের উদ্দেশে প্রাচীনকালে ব্যবহৃত হত।
এই গাছটি সম্পর্কে জানাগেছে, এটি ভেষজগুণ সমৃদ্ধ একটি বৃক্ষ। চোখের সমস্যা, পোড়া ক্ষত ও ফাইলেরিয়া রোগের চিকিৎসায় পুত্রঞ্জীব গাছের ব্যবহার করা হত। ভিটামিনের ঘাটতি হলে পুত্রঞ্জীব বীজের গুঁড়ো ব্যবহার করা হত। পুত্রঞ্জীব চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ কাণ্ড দীর্ঘ কাষ্ঠল। পাতা সরল ঢেউ খেলানো, সবৃন্তক ও একান্তর পত্রবিন্যাস যুক্ত। উৎসবে, অনুষ্ঠানে এই পাতা অলঙ্কার হিসাবে সাজানো হত এক সময়। পাতার কক্ষে হলুদাভ সাদা বর্ণের ফুল হয়। পুরুষ ফুলগুলি অবৃন্তক ও স্ত্রী ফুলগুলি সবৃন্তক পাপড়িহীন হয়ে থাকে। এদের ফলগুলি গোলাকার বা ডিম্বাকার ড্রুপ জাতীয়। ফলের ভিতরে একটি বীজ থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুটি বীজও দেখতে পাওয়া যায়। পুত্রঞ্জীব পুত্রাঞ্জিভাসি পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি।
কথিত রয়েছে, এই গাছের বীজ নব যৌবন দান করে পুত্র ধারনে সাহায্য করত। এই গাছের বীজ পুরুষ ও স্ত্রী দের জননতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে পুত্র উৎপাদনে সহায়তা করত। আগের দিনে মানুষ শিশুপুত্রদের দীর্ঘজীবন কামনায় এ গাছের ফল ব্যবহার করতেন। তখন মানুষ প্রেতযোনীর কোপানল থেকে নিজের সন্তানকে বাঁচানোর জন্য পুত্রঞ্জীব ফলের কবজ বানিয়ে গলায় পরিয়ে দিতেন। তারা বিশ্বাস করতেন, এই ফল তার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখবে। এসব কথার কথা অথবা গল্প হতে পারে। তবে গাছটির পুত্রঞ্জীব নামকরণও সম্ভবত এ কারণেই—এমনটা মনে করেন অনেকে।
পুত্রঞ্জীব উদ্ভিদ ভিন্নবাসী উদ্ভিদ তাই সব গাছে ফল দেখা যায় না। অনেকে এটিকে দেবদারু গাছের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। আমাদের দেশে সচরাচর এ গাছের দেখা মিলে না।
বুড়িরহাট হটিকালচার সেন্টারের উড পরিচালক ড. মো আবু সায়েম জানান, গাছটির আনুমানিক বয়স হবে ৫৯ বছর। এটি বিপন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। এই গাছ এখন খুব একটা দেখা যায় না।

