নির্বাচন ঠেকিয়ে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে বিএনপি বাংলাদেশকে বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। দেশ বাঁচাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথ দখলে রাখার শপথ নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা’র ৭৭ তম জন্মাদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তারা। সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমরা আগামী দিনগুলোতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহার দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত সাফল্যে সুরক্ষা দেয়ার শপথ নেব।
প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, শেখ হাসিনা ছিলেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ আজকে অনেক কিছু পেয়েছে। নেতাকর্মীদের বলি আগামী নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেই নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যাকেই মনোনয়ন দিক তার পক্ষে কাজ করতে হবে। আমি কি পেলাম সেটি না ভেবে আমি কি দিলাম সেটি ভাবতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো শক্তি আওয়ামী লীগকে হারাতে পারবেন না।
প্রেসিডিয়ামের আরেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান বলেন, দেশে-বিদেশে যারা এখন ষড়যন্ত্র করছে তারা ’৭১-এ ভয় দেখিয়েছিল সপ্তম নৌবহর পাঠাবে বলে। আজও একইভাবে ভয় দেখাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে সুসংগঠিত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রেসিডিয়াম আরেক সদস্য শাজাহান খান বলেন, বিএনপি-জামায়াত খেলায় পারবে না। এই বিএনপি জামায়াত বিজয় লাভ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য আপামর জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাজ হবে ঘরে ঘরে গিয়ে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেয়া।
বিএনপি আল্টিমেটামের সমালোচনা করে প্রেসিডিয়ামের আরেক সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হয়ে বিএনপি-জামায়াত শেখ হাসনিার সরকারকে উৎখাত করতে চায়। আর বারবার দফা দেয়, এই দফার কোনো শেষ নাই। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ৫ দিন হয়ে গেল। আপনাদের হেডম জানা আছে। ১৫ বছরে কিছু করতে পারলেন না একমাসে উল্টোয় দিবেন।
প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, উন্নয়ন ব্যাহত করার জন্য জাতীয় ও আন্তার্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে বানচাল করতে চায় দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে চায়। তাই শপথ নিতে হবে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে নৌকাকে আবারো নির্বাচিত করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে হবে।
প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, শেখ হাসিনা একদিকে ভোট ভাতের সংগ্রাম করেছেন, আরেকদিকে গণতনেত্রর জন্য সংগ্রাম করেছেন। সেই সময়ে কারফিউ দিয়ে মানুষের টুটি চেপে রেখেছিল। সেই বাংলাদেশ কঠিন এক বাংলাদেশ। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে দেশের এই কোনা থেকে ওই কোনায় চষে বেড়িয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই ক্যান্টনমেন্ট থেকে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল।
প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, যতো বড়ই বিশ্ব মোড়ল হোক না কেন বঙ্গবন্ধুর মতো তার মেয়েও এদেশের এক ইঞ্চি মাটিও অন্যের কাছে বন্ধক রাখবে না। মেঘ কেটে যাবে। সূর্য উঠবে শিগগিরই। আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের ম্যান্ডেড নিয়ে আবারো প্রধানমন্ত্রী হবেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নয়, একটি সংগ্রামী উপাখ্যানের নাম। বারবার যিনি মৃত্যদুয়ার থেকে ফিরে এসে মানুষের ভোটও ভাতের অধিকারকে এগিয়ে গিয়ে গিয়েছেন। আজকে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন নানা ষড়যন্ত্র। বিএনপি তাদের বেনিয়াদের হাতে এই দেশকে তুলে দিতে চায়। তারা এদেশে তাবেদার সরকারে পরিণত করতে চায়।
আরেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি জামায়াত যারা বাংলাদেশকে তলিয়ে দিয়েছিলো, কোনো আশা ভরসা ছিলো না, হাওয়া ভনের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছিলো, উগ্র জঙ্গবাদের উত্থানে দেশ সন্ত্রাসের দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলো সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিদ্যুৎ রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশকে এখন বিশ্বে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। বাঙালি জাতির মুকুটমণি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনা না থাকলে এদেশ কখনো ঘুরে দাঁড়াতো না।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আজকে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের একটি উদ্দেশ্য, তা হলো শেখ হাসিনাকে নিঃশেষ করা। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র। সেটা হবে না। আমরা রাজপথে আছি, থাকবো।