বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরে শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির সমস্যা বাড়ছে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকা মানুষদের মধ্যে হাঁপানির টান, কাশি, বুকে চাপ ও ঘুমের সমস্যা আরও তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকেই মনে করেন, শ্বাসের সমস্যা থাকলে ব্যায়াম করা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, সঠিক নিয়মে কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম ও প্রাণায়াম হাঁপানির উপসর্গ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসভিত্তিক ব্যায়াম ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাসনালির পেশি শিথিল করে এবং শ্বাসের গতি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
কোন কোন ব্যায়াম উপকারী
ধনুরাসন
এই যোগাসন ফুসফুস প্রসারণে সহায়ক। উপুড় হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা পেছনে তুলতে হয়। এরপর হাত দিয়ে গোড়ালি ধরে বুক ও ঊরু মেঝে থেকে তুলতে হবে। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস নিতে নিতে ২০–৩০ সেকেন্ড থাকা যায়। দিনে দুই থেকে তিনবার করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
কপালভাতি
শ্বাসপ্রশ্বাসের শক্তি বাড়াতে কপালভাতি কার্যকর বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। আরামদায়ক আসনে বসে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দ্রুত শ্বাস ছাড়তে হয়, যেখানে পেটের পেশির উপর চাপ পড়ে। শুরুতে অল্প সময় করে অভ্যাস করা ভালো। নিয়মিত চর্চায় শ্বাসনালি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এই প্রাণায়াম।
অনুলোম–বিলোম
হাঁপানির রোগীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর প্রাণায়ামগুলোর একটি অনুলোম–বিলোম। একবার ডান নাক চেপে বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার পর বিপরীত দিকে একইভাবে শ্বাসের আদান–প্রদান করতে হয়। এই প্রাণায়াম শ্বাসের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতেও সহায়ক।
সতর্কতা জরুরি
চিকিৎসকেরা বলছেন, হাঁপানি তীব্র থাকলে বা শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ধুলাবালি বা দূষিত পরিবেশে ব্যায়াম না করাই ভালো।
দূষণের এই সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম, মাস্ক ব্যবহার এবং ওষুধ যথাযথভাবে গ্রহণ করলে হাঁপানির কষ্ট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব—বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

