বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন দিন, বিরোধী দলীয় সহিংসতার নিন্দা করুন

0

বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থক দিন, বিরোধী দলীয় যে সহিংসতা সে দেশে চলছে তার নিন্দা করুন।- ইইউ রিপোর্টার-এর রাজনৈতিক সম্পাদক নিক পাওল লিখেছেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে এই আহবান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘স্টাডি সার্কেল লন্ডন।’ তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি প্রধান বিরোধী দলগুলোর সমর্থকদের সহিংসতা প্রত্যক্ষ করেছে। স্পষ্টতই এটা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা; এতে বিরোধী দলগুলোর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। 

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা বিরোধী দলীয় সহিংসতা সম্পর্কে জানানোর জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ‘ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ব্রিফিংয়ে ইইউ সংসদ সদস্য ও তাদের সহযোগীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন স্টাডি সার্কেল লন্ডনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোজাম্মেল আলী। তিনি রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের সহিংসতার নিন্দা জানানোর জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান। 

থিংক ট্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোজাম্মেল আলী আলী এই ঘটনাগুলোকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি ও তার মিত্ররা যে সন্ত্রাসের অবস্থা সৃষ্টি করেছিল তারই প্রতিরূপ বলে অভিহিত করেন। 

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়ে দেশের সমৃদ্ধিতে পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল। ১১ কোটি ২০ লাখ ভোটারের দেশটিতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

থিঙ্ক ট্যাঙ্কের চেয়ারম্যান বলেন, পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের উচিৎ কঠোর সমালোচনা না করে বাংলাদেশকে সহায়তা করা। তাদের এই সমালোচনা একটি গর্বিত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে ইসলামী দলগুলোর হাতে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকিতে ফেলছে। 

তিনি বলেন, তাঁর দেশ প্রায়শ ইউরোপের লোকদের অন্যায্য সমালোচনা ও নেতিবাচক প্রচারের মুখোমুখি হয়। অনির্ভরযোগ্য উৎসের ওপর ভিত্তি করে এসব সমালোচনা হয়।  
ব্রিফিং উপস্থাপনায় ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য- চেকপ্রজাতন্ত্রের পিপলস পার্টির টমাস জেডচেকোভস্কি। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের অসাধারণ প্রবৃদ্ধি এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পর অর্জিত সুস্থিতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের জয় হবেই।’

বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনজীবী ড. রায়ান রশিদ তার মাতৃভূমিকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ বলে বর্ণনা করেন যেখানে সংবিধানে সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত। তার মতে- এটি এমন একটি দেশ যেখানে স্বাধীনতার আগে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ প্রবল। যদিও বর্তমানে এটি দুর্দান্ত অগ্রগতি অর্জন করেছে। অন্যান্য দেশের মতো এখানেও কখনো কখনো গণতন্ত্রে স্থবিরতা এসেছে। তাই বলে বেছে বেছে শুধু ত্রুটিগুলোর উল্লেখ করাটা হবে অপতথ্য ছড়ানোর সমতুল্য।   

বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অপতথ্য দ্রুত ছড়ায়’।  ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমপিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ঔপনিবেশিক আমলের মতো আচরণ করা ঠিক হবে না। ইউরোপকে বাংলাদেশের জন্য সাহায্য ও বন্ধুত্বের উৎস হতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে যা ঘটছে তার সাথে বাইরের চাপ কীভাবে কাজ  করে সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। নতুন করে উপনিবেশবাদ কাম্য নয়।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here