বাংলাদেশি এক কিশোরীকে নাচের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশে সহায়তা করা এবং পাচার করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুক্রবার এক নারীসহ ওই তিন ভারতীয় ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করার পর শনিবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান স্থানীয় এক আদালত।
জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে এক বাংলাদেশি কিশোরীকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দত্তপুলিয়া সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশ করার অভিযোগে আটক করে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পরে ওই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিএসএফ জানতে পারে তাকে ভারতে নাচের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের মাটিতে প্রবেশ করার পরই তাকে পাচার করে দেওয়া। যদিও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় পাচারকারীদের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
ওই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এও জানতে পারে যে, বাংলাদেশে তারই এক পরিচিত ব্যক্তি তাকে ওই কাজের প্রলোভন দেখায়। পরে তারই সহায়তায় ওই নাবালিকাকে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে নিয়ে আসার পিছনে ছিল এক ভারতীয় নারী ও দুই পুরুষ।
পরে বিএসএফ’এর পক্ষ থেকে আটক ওই নাবালিকাকে তুলে দেয়া হয় রাজ্যটির নদীয়া জেলার ধানতলা পুলিশের হাতে। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই নাবালিকাকে স্থানীয় হোমে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে অভিযুক্ত দুই পুরুষ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলেও দীর্ঘদিন পলাতক ছিল অভিযুক্ত নারী।
পরবর্তীতে ওই ঘটনা তদন্তের ভার নেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। তদন্তে নেমেই ভারতের মুম্বাই থেকে অভিযুক্ত পলাতক নারীকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
ওই ঘটনায় দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে নদীয়া জেলার রানাঘাট মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা চলে। বিএসএফসহ বিভিন্ন মানুষের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে শুক্রবার ওই নারীসহ তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
শনিবার দোষী সাব্যস্ত তিনজনকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন রানাঘাট মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মনোদ্বীপ দাশগুপ্ত।