বরিশালে চার বছরের এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মো. সুজন (২৪) নগরীর ধান গবেষণা রোড জিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা মো. মনিরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকেলে জিয়ানগর এলাকায় এক শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি রয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে শনিবার থানায় সুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, বিকেলে অভিযুক্তকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সুজন মারা যায়। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিশুটির পিতা, একজন রিকশাচালক, জানান, শুক্রবার দুপুরে সুজনের বাসার মালিক তার মেয়েকে বাটিতে তরকারি দেন। তরকারি রেখে ফিরে যাওয়ার সময় শিশুটি সুজনের ঘরে টিভিতে কার্টুন চালু দেখতে পায় এবং কার্টুন দেখতে বসে। তখন বাসায় একা থাকা সুজন শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
শিশুটি চিৎকার করলে সুজন তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর শিশুটি বাসায় ফিরে তার মাকে ঘটনা জানায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবার প্রথমে স্থানীয়দের কাছে বিচার চায়, পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শিশুর পরিবার জানায়, শনিবার থানায় মামলা করার পর সন্ধ্যায় তারা জানতে পারেন যে, এলাকাবাসী সুজনকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে। পরে তারা শোনেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
সুজনের মায়ের দাবি: পরিকল্পিত হত্যা
সুজনের মা মঞ্জু বেগম দাবি করেন, তার ছেলে নির্দোষ। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি মাদক বিক্রির জন্য সুজনকে চাপ দিচ্ছিল, কিন্তু রাজি না হওয়ায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর কিছু লোক আমাদের কাছে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। আমরা রাজি হইনি। এরপর স্থানীয় বাধন, বাচ্চু, স্বর্ণা ও সাদ্দামসহ ১০-১৫ জন মিলে আমার ছেলেকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেছে।”
তিনি সন্তান হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন।