বরিশালে গৃহবধূকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণের দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রবিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এ রায় দেন বলে বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন। একজন পলাতক রয়েছেন।
দন্ডিতরা হলো-নগরীর রূপাতলী ধানগবেষনা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধানগবেষনা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)। রায় ঘোষনার সময় খোকন খান পলাতক ছিলো।
মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা জানান, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ধানগবেষনা রোডের বাসিন্দা তরুনী গৃহবধূ (১৯) তার মায়ের সাথে ঝগড়া করে। তখন ওই গৃহবধূ রাগ করে অটোরিক্সায় উঠে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। অটোরিক্সা চালক তাকে ভুল পথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রীজের উপর নিয়ে আসে। সেখানে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতপা বেধে খ্রীষ্টান পাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে দন্ডিত চারজনসহ অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জন রাতভর পালাক্রমে ধর্ষন করে। ভোর রাতে অজ্ঞাত একটি বাড়ির সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে যায়। ওই বাড়ির অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাকে ধর্ষণ করে। সকালে স্থানীয় কয়েক নারী পুরুষ তাকে পড়ে থাকতে দেখে। তারা গৃহবধূর কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারধর করে ফেলে চলে যায়। তখন ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বোরখা পেয়ে সেটি পরিধান করে বাড়ির যায়। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর নামধারী ৪ জনসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনকে আসামী করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।
কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর আদালতে চার জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট জমা দেয়। বিচারক ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় দিয়েছেন।
বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান বলেন, রায়ে করা জরিমানার অর্থ আদায় হলে ধর্ষিতা গৃহবধূকে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

