বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পথে ডাকাতির কবলে পড়া এফবি ভাই ভাই ট্রলারে নিখোঁজ পাঁচ জেলের মধ্যে দুই জেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার পর বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ইমরুল কায়েস এবং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধারকৃতরা হলো- ট্রলারের মাঝি কাইয়ুম জোয়াদ্দার ও বাবুর্চি আবুল কালাম। কাইয়ুম জোয়াদ্দার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চামুপাড়া এলাকার মানিক জোমাদ্দারের ছেলে এবং আবুল কালাম বরগুনা সদর উপজেলার রায়ভোগ গ্রামের মৃত্যু নাজেম হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ জেলেরা হলো আব্দুল আলিম (২২), ফরিদ মিয়া (৩০), খায়রুল (২৮)। তাদের বাড়ি বরগুনার নলিচরকগাছিয়া গ্রামে।
১২ দিন পর কিভাবে লাশের পরিচয় শনাক্ত হলো এ বিষয়ে কালাম জেলের ছেলে রুবেল বলেন, ফিরে আসা জেলে ইয়াসিন জোমাদ্দার জানিয়েছিলেন আমার বাবার ডান হাতে ডাকাতরা কোপ দিয়েছিল। গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ইয়াসিন জোমাদ্দার সেই ক্ষতস্থান বেঁধে দিয়েছিল। এই ক্ষত দেখেই বাবাকে চিনতে পেরেছি।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জেলেকে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া জেলেদের মধ্যে চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এদের মধ্যে একজন মারা গেছে। নিখোঁজ অপর পাঁচ জেলের মধ্যে ১২ দিন পর দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার জানান, উদ্ধার হওয়া দুই জেলের মরদেহ গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মালিক সমিতির নেতাদের মাধ্যমে মরদেহ দুটি বরগুনা মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গত ১৭ ফেরুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে পায়রাবন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় এফবি ভাই ভাই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ৯ জেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়। বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে মালামাল লুটে নেয় দস্যুরা। এর তিনদিন পর নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে ৪ জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করলেও চিকিৎসাধীন এক জেলের মৃত্যু হয়। বাকি ৫ জেলের মধ্যে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।