আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, মানুষের পিছুটানে যদি বাধা না থাকে, সংশয় না থাকে তাহলে তার জন্য যে কোনো কাজ করা সহজ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতাকে সেরকম মানুষই পেয়েছিলেন। বঙ্গমাতা কখনও বঙ্গবন্ধুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াননি এবং তিনি সাংসারিক সকল দায়-দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক পথ চলা মসৃণ হয়েছিল।
মঙ্গলবার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে যুবলীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে “প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী” শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আমির হোসেন আমু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসমাপ্ত আত্মজীবনী লিখেছিলেন। এই আত্মজীবনী লেখার পেছনে প্রেরণা ছিল বঙ্গমাতার। বঙ্গবন্ধু তখন জেলে। বঙ্গমাতা খাতা-কলম নিয়ে জেলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে বলেছিলেন বসে বসে লিখ।
তিনি আরও বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সফলতা থেকে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার পিছনে বঙ্গমাতার অবদান সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, অনেক নেতার সন্তান বিদেশে লেখাপড়া করেছে কিন্তু একজন শেখ মুজিবের সন্তানেরা এদেশের মাটিতে লেখাপড়া করেছে। আজকে বঙ্গমাতার জন্মদিনে বলতে চাই-আদর্শকে বুকে ধারণ করে জাতি যেন আরও অনেক দূর এগিয়ে যায়।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ফাস্ট লেডি হওয়া সত্ত্বেও অতি সাধারণ জীবন যাপন ছিল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের। আজন্ম কষ্ট, বঞ্চনা এবং বিয়োগব্যাথা তাকে এক অসাধারণ মানবিক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করেছিল। তার কোন জৌলুশ ছিল না, ছিল না কোন চাকচিক্য, অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তার চাল-চলনে ছিল শাশ্বত বাঙালির মধ্যবিত্ত নারীর আটপৌর রূপ। ছিল না কোন লোভ-লালসা বা সখ-আহ্লাদ। জীবনে কোনো কিছু আবদার করে নাই স্বামীর কাছে বা শ্বশুরের কাছে। নিভূতে সকল কষ্ট সহ্য করেছেন। বঙ্গমাতাকে কাছ থেকে দেখার সামান্য সৌভাগ্য হয়েছে আমার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সেই মানবিক ও চারিত্রিক গুণাবলি দেখে আমরা বিমোহিত হই, তার সবগুলো গুণাবলি আর্জন করেছেন তার মাতা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব থেকে।
সম্মানিত অথিতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ পথপরিক্রমায় থেকে জাতির পিতা হওয়ার পিছনে যে মানুষটির সবচেয়ে বেশি অবদান তিনি হলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। ৬ দফার সময় যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়, সেই সময় তিনি কিভাবে দল চালিয়েছেন, নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন তা সত্যিই অভিভূত হতে হয়। একজন সাধারণ নারী থেকে আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সকল ক্ষেত্রে একত্রিত রাখা সত্যিই তার নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় গুণ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশকে ভালবেসেছিলেন, বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে দেশকে সে ভাবেই ভালবেসেছিলেন। আমরা বঙ্গমাতার কাছ থেকে শিখতে পারি কিভাবে আদর্শগতভাবে সৎ থাকতে হয়, কিভাবে করুণ দুঃসময়ে অবিচল থেকে মোকাবিলা করতে হয়।