বগুড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আলহাজ শেখকে কারাগারে প্রেরণ

0

হত্যা, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ ২০ মামলার আসামি বগুড়া জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এবং পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রায় তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে শহরের সূত্রাপুর এলাকায় তালাবদ্ধ ফ্লাটের বাথরুম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতার আলহাজ শেখ সূত্রাপুর এলাকার মৃত মুনছুর শেখের পুত্র। পুলিশের তালিকাভুক্ত এই সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ ওরফে মিষ্টার হত্যা মামলা আসামি। 

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপন করেন যুবলীগ নেতা আলহাজ শেখ। ৩০ ডিসেম্বর রাতে বাড়িতে আসেন তিনি। এরপর থেকে আলহাজ নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে পুলিশের কাছে তথ্য আসে আলহাজ শেখ তার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১২ টার দিকে সদর থানা ও ডিবি পুলিশে যৌথ টিম শহরের গোহাইল রোডে সূত্রাপুর এলাকায় তার বাড়িতে অভিযান চালায়। আট তলা ভবনের প্রতিটি ইউনিট তল্লাশী করেও পুলিশ আলহাজ শেখকে খুঁজে পায়নি। এক পর্যায়ে ভবনের ছাদে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় সিড়ি ঘরে দরজা খোলা। এতে পুলিশের সন্দেহ হয় আলহাজ শেখ ছাদ দিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। এ সন্দেহ থেকে পুলিশ পাশের আরেকটি আটতলা ভবনে তল্লাশী শুরু করে। একপর্যায় পুলিশ দেখতে পারে আটতলায় জনৈক বাবুর একটি ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। 

পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের মালিককে ফোন করলে তিনি জানান, বাসায় তালা দিয়ে তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। পরে পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের তালা ভেঙ্গে তল্লাশী করতে চাইলে ফ্ল্যাটের মালিক চাবি পৌঁছে দেন। এরপর রাত তিনটার দিকে তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট খুলে বাথরুম থেকে আলহাজ শেখকে গ্রেফতার করা হয়।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন জানান, গ্রেফতারের পর আলহাজ শেখকে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে  ছাত্র জনতার আন্দোলনের ঘটনায় হত্যাসহ ২০টি মামলা হয় আলহাজ শেখের নামে। এছাড়াও তার নামে পূর্বের আরো মামলা রয়েছে। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। 

তিনি আরও জানান, আলহাজ শেখ এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে ইতিপূর্বে ৬টি হত্যা, বিষ্ফোরক ও ১ টি অস্ত্রসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালের ৫ জুন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ ওরফে মিষ্টারকে হত্যা করা হয়। এরপর ৬ জুন নিহতের পিতা আরমান আলী বাদী হয়ে আলহাজ শেখসহ ১২জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তিনি প্রধান আসামি। এছাড়া আলহাজ শেখ বগুড়ার সিএনজি অটোরিকশার চাঁদা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এ জন্য একটি সাব-ক্যাডার বাহিনীও আছে তার। আলহাজের বিরুদ্ধে আপন ভাতিজা কসবো হত্যার অভিযোগও রয়েছে।

বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসা জানান, বগুড়ায় পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের খুঁজের বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here