বগুড়ার মহাস্থান হাটে মাইকে প্রচার করে ৬৭৫ বস্তা কার্ডিনাল আলু ৩৩ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। শিবগঞ্জে তিন মজুতদারের কাছে পাওয়া এই আলু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে বিক্রি শুরু হয়। পাইকারি সবজির এই হাটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু পেয়ে খুশি খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
জানা যায়, বুধবার বগুড়ার শিবগঞ্জের সাহা লিমিটেড ও হিমাদ্রি লিমিটেড হিমাগারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তিন মজুতদারের কাছে ৬৭৫ বস্তা কার্ডিনাল আলু পাওয়া যায়। এর মধ্যে সাহা লিমিটেড হিমাগারে পরিতোষ কুমারের কাছে ১৯০ বস্তা, অর্জুন সরকারের কাছে ২৮৫ ও হিমাদ্রি লিমিটেড হিমাগারে আফজাল হোসেনের কাছে ৩০০ বস্তা আলু পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক মহাস্থান হাটের ৯ জন পাইকারি ব্যবসায়ীকে ডেকে মজুত পাওয়া আলু পাইকারি সাড়ে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। বৃহস্পতিবার এই ব্যবসায়ীরা মহাস্থান হাটে ৩৩ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করছেন।
মহাস্থান হাটে আলু ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, সাড়ে ২৮ টাকায় আলু ক্রয়ের পর ৩৩ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতা ও ব্যবসায়ী উভয়েই স্বল্প দামে আলু ক্রয় করতে পারছেন। গত বুধবারও ৩৬ টাকায় আলু ক্রয় করে ৩৮ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। আমরা যেমন দামে পাবো তেমন দামে বিক্রি করবো। প্রশাসনের এই ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে করে সিন্ডিকেট ভেঙে পড়বে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে ১০ লাখ ২৪ হাজার ১২০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে দেশীয় পাকড়ি, হাগড়াই জাতের আলুর চাষ করেন কৃষকরা। বাকি জমিগুলোয় বিদেশি ও উফশী কার্ডিনাল, গ্রানোলা, ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ হয়েছে। কৃষকরা প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৫ মেট্রিক টন করে এই জাতের আলুগুলোর উৎপাদন পেয়েছেন।
মহাস্থান হাটে আলু ক্রয় করতে আসা খুচরা ব্যবসায়ী ফরিদুল হক জানান, গত দুইদিন আগেও পাইকারি ৩৮ টাকায় আলু কিনেছি। বৃহস্পতিবার ৩৩ টাকায় এক বস্তা আলু ক্রয় করতে পেরে আমি খুশি। এই আলু খুব সহজে খুচরা বাজারে ৩৬ টাকায় বিক্রি করা যাবে। এতে লাভও ভালো হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তাসনিমুজ্জামান জানান, গত বুধবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হিমাগারে অভিযান চালিয়ে তিন মজুতদারের কাছে ৬৭৫ বস্তা আলু পাওয়া যায়। এই আলুগুলো হিমাগার থেকে সাড়ে ২৮ টাকায় মহাস্থান হাটের পাইকারি আলু ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। আলুর মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।