হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে বগুড়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। জেলার গাবতলী উপজেলার তরনীহাটে ইছামতী নদীতে ১১টি নৌকার নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে কয়েক হাজার মানুষ নদীর উভয়পাড়ে ভিড় করে। নৌকা বাইচকে ঘিরে এলাকায় বসে ছিল মেলাও। বিভিন্ন বয়সীরা আনন্দের সাথে উপভোগ করেন এই নৌকা বাইচ।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল পর্যন্ত চলে এই নৌকা বাইচ। গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আয়োজনে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। গাবতলী, শাজাহানপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার ১১টি নৌকা নিয়ে বাইচটি অনুষ্ঠিত হয়। তরনীহাট ব্রিজের উত্তর থেকে যাত্রা শুরু করে ১ কিলোমিটার দক্ষিণে গিয়ে বাইচ সমাপ্ত করে। এসময় ইছামতী নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে, আশপাশের বাড়ির ছাদ, গাছের ডালে, ব্রিজের রেলিংয়ে উঠে হাজার হাজার মানুষ এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। প্রতিযোগিতায় ১১টি দল ১ম রাউন্ডে অংশগ্রহণ করে। পরে সেখান থেকে ৮টি দল কোয়ার্টার ফাইলের প্রতিযোগিতা করে। এরপর সেমিফাইনালে উড়াল পঙ্খি বনাম সততা এবং আল্লাহ ভরসা বনাম ইনশাল্লাহ এর মধ্যে লড়াই হয়। সকাল ১০টা থেকে নৌকা বাইচ শুরু হয় সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। নৌকা বাইচ শেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিজয়ীদের মাঝে পুস্কার বিতরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আহবায়ক মোজাম্মেল হক লালু, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু, গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ সনাতন চন্দ্র দাস, বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী ফকির, নৌকা বাইচ উদযাপন কমিটির সভাপতি শাহনেওয়াজ জাকিরসহ বালিয়াদিঘী ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যরা।
বগুড়া জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু জানান, যুব সমাজকে মাদক ও অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে দূরে রাখতে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহি খেলা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। যুব সমাজকে দেশ গড়ার কাজে ভ‚মিকা রাখতে, উৎসাহ প্রদান করতে এই আয়োজন হয়ে থাকে। যুবকরা যেন আগামী দিনে দেশীয় ঐতিহ্য নিয়ে বেড়ে উঠে। শিক্ষামুখি হয়ে দেশ গড়ার কাজে মনযোগি হয়ে উঠে সে কারনে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে কথাগুলো প্রচার করা হয়। সেই সঙ্গে নদী রক্ষার জন্য এলাকাবাসিকেও সচেতন করা হয়ে থাকে।