ফের ভেনেজুয়েলার কথিত ‘মাদকবাহী’ নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

0
ফের ভেনেজুয়েলার কথিত ‘মাদকবাহী’ নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ভেনেজুয়েলা থেকে আসা একটি মাদকবাহী নৌযানে আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন।

সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানান, তার সরাসরি নির্দেশে ‘সহিংস মাদক কার্টেল ও নারকো-সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। যদিও নৌযানটিতে মাদক ছিল—এমন কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেননি তিনি।

বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “আজ সকালে আমার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়েছে। এগুলো ছিল ভয়ঙ্কর সহিংস মাদক কার্টেল ও নারকো-সন্ত্রাসীদের নৌযান।” তিনি আরও দাবি করেন, হামলার পর সমুদ্রজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোকেন ও ফেন্টানিলের বড় চালান জব্দ করা হয়।

ট্রাম্প বলেন, “সামুদ্রিক পথে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ কিছুটা কমলেও স্থলপথ দিয়ে এখনো তা আসছে। আমরা কার্টেলগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছি—স্থলপথেও তাদের থামানো হবে।”

মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিওও হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়ে জানান, ওয়াশিংটনের কাছে “শতভাগ নিশ্চিত প্রমাণ” ছিল যে নৌযানটি মাদক পাচারে জড়িত ছিল।

অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই হামলাকে “বোমা হামলার হুমকি” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈধ আত্মরক্ষার অধিকারকে অবজ্ঞা করছে এবং দুই দেশের সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভেনেজুয়েলা আত্মরক্ষায় প্রস্তুত।”

সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। গত সপ্তাহে পরিচালিত এক অভিযানে ১১ জন নিহত হন। ওই ঘটনার পর উত্তেজনা আরও বাড়ে, যখন ভেনেজুয়েলা দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়িয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ঘিরে ফেলে। জবাবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, “ভেনেজুয়েলার যুদ্ধবিমান যদি মার্কিন সেনাদের ঝুঁকিতে ফেলে, তবে সেগুলো গুলি করে ভূপাতিত করা হবে।”

নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যখন ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিল অভিযোগ করেন, মার্কিন নৌবাহিনী তাদের একটি মাছ ধরার নৌযান আট ঘণ্টা ধরে অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল। তার দাবি, “যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাত উসকে দিচ্ছে এবং এর লক্ষ্য কারাকাসে শাসন পরিবর্তন।”

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বহু পশ্চিমা দেশ ভেনেজুয়েলার ২০২৪ সালের জুলাই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিজয়কে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের দাবি, নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী এডমুন্ডো গনসালেস প্রকৃত বিজয়ী ছিলেন।

এছাড়া, মার্কিন প্রশাসন মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার মাথার দাম ৫ কোটি ডলার ঘোষণা করেছে। তবে এসব অভিযোগ মাদুরো সরাসরি অস্বীকার করে একে “আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করেছেন।

সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স।

প্রতিদিন/শআ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here