বিশ্বে নভেম্বর মাস ফুসফুস ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে পালিত হয়। বর্তমানে বিশ্বে প্রধান ক্যান্সার এই ফুসফুসের ক্যান্সার এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর সংখ্যায়ও এটি সবচেয়ে বেশি। সাধারণত একটু বয়স্কদের মধ্যে অর্থাৎ গড়ে ৭০ বছর বয়সে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তবে অল্প বয়সেও হতে পারে। উত্তর আমেরিকা এবং পূর্ব ইউরোপীয় এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব বেশি হলেও পৃথিবীর সব অঞ্চলেই এই রোগ দেখা যায়। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (IARC)-এর তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রতি ৫ জনে ১ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। পুরুষদের প্রতি ৮ জনে ১ জন এবং মহিলাদের প্রতি ১১ জনে ১ জন মৃত্যুবরণ করছেন। অনুমান করা যায় যে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। ২০২০ সালে নতুন আক্রান্ত ১৯,৩ মিলিয়ন এবং মারা গেছেন ১০ মিলিয়ন মানুষ। ২০৪০ সাল নাগাদ ২৯.৫ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন এবং ১৬.৪ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করবেন।
যদিও অন্যান্য ক্যান্সারের মতো সঠিক কারণ অজানা কিন্তু ধূমপান এই রোগের প্রধান কারণগুলোর একটি। যারা নিজেরা ধূমপান করেন এবং যারা ধূমপায়ীর কাছাকাছি থেকে পরোক্ষভাবে ধূমপান করেন প্রত্যেকেই ঝুঁকিতে রয়েছেন। এছাড়া যারা এসবেস্টস বা এ জাতীয় ডাস্ট তৈরিকারী কলকারখানায় কাজ করেন বা বিভিন্ন খনিতে কাজ করেন বা রেডন নামের ভারী গ্যাসের সংস্পর্শে দীর্ঘ সময় থাকেন বা বায়ু, পানি অর্থাৎ পরিবেশদূষণের শিকার তারা প্রত্যেকেই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। অনেকে ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট খান বা ভেপ নেন যা সমান ক্ষতিকারক। ই-সিগারেটে অ্যাক্রোলিন নামের একটি কেমিক্যাল থাকে যা আগাছা নিধনকারী। এ বিষ ধোঁয়ার সাহায্যে শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ নানা অসুখ হতে পারে।
লেখক : সাবেক পরিচালক, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল।