প্রকৃতির একটি দুর্লভ বৃক্ষ হচ্ছে নাগলিঙ্গম। এ ফুলের গন্ধ, বর্ণ ও বিন্যাসে যে কেউ মুগ্ধ হয়। শাখা-প্রশাখায় নয়, এ বৃক্ষের ফুল ও ফল হয় কাণ্ডে। বরিশাল নগরীর সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে রয়েছে একটি নাগলিঙ্গম গাছ। বর্তমানে ফুলে ও ফলে ভরে গেছে গাছের কাণ্ড। বিএম কলেজের বোটানি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাসনিম সুলতানা বলেন, এ গাছটি বিলুপ্তপ্রায়। এটা রক্ষায় এগিয়ে আসা উচিত। জাতীয়ভাবে কোনো প্রকল্প আছে বলে জানা নেই। না থাকলে অবশ্যই নেওয়া উচিত।
তিনি জানান, বরিশাল বিভাগে শুধু দুটি গাছ রয়েছে। এর একটি বিএম কলেজে ও অপরটি স্বরূপকাঠি কলেজে। সারা দেশে শতাধিক গাছ রয়েছে।
নাগলিঙ্গমের বৈজ্ঞানিক নাম ‘কুরুপিটা গুইয়ানেন্সিস’। প্রায় তিন হাজার বছর আগে আমাজান জঙ্গলে প্রথমে এই গাছের সন্ধান মেলে। গাছগুলো ‘ক্যানন বল’ (কামানের গোলা) নামেও পরিচিতি। ভারতে নাগলিঙ্গমকে ‘শিব কামান’ নামে ডাকা হয়।
নাগলিঙ্গম ফুল সারা বছর ফুটলেও গ্রীষ্মকাল হচ্ছে উপযুক্ত সময়। শীত এবং শরৎকালে গাছে অপেক্ষাকৃত কম ফুল ফোটে। বিএম কলেজ ক্যাম্পাসের গাছটি অনেক পুরোনো ও বড় আকারের।
এটি কবে রোপণ করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারেনি। বহু শাখাবিশিষ্ট নাগলিঙ্গম গাছের বড় বড় কান্ডে ফুল ও ফল ধরেছে। ফুল সাপের ফণার মতো বাঁকানো। রাতের বেলায় ফুল থেকে তীব্র সুগন্ধ বের হয়, যা সকাল পর্যন্ত থাকে। এ গাছের রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষধি গুণ। ফুল ও রস চর্ম এবং ম্যালেরিয়াসহ নানা রোগ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। ফুল ও ফলের নির্যাস থেকে দামি সুগন্ধি তৈরি করা হয়। ফলগুলো হাতির খুবই প্রিয় খাবার। এজন্য এর অন্য নাম হাতির জোলাপ গাছ বলা হয়।