সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাজার হাজার পৃষ্ঠার সরকারি নথি প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আর্কাইভস জানায়, শ্রেণীবদ্ধকরণের জন্য সমস্ত রেকর্ড আটকে রাখা হয়েছিল। এখন তা প্রকাশ করা হয়েছে এবং অনলাইনে ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তা উন্মুক্ত রয়েছে।
আর্কাইভ দুটি ধাপে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রায় ৬৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি আপলোড করেছে। ডিজিটাইজড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ফাইল অনলাইনে পোস্ট করবে তারা।
তুলসি গ্যাবার্ডের নেতৃত্বাধীন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, তাদের কাছে প্রায় ৮০ হাজার পৃষ্ঠার শ্রেণিবদ্ধকৃত রেকর্ড রয়েছে।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। তাই প্রকাশিত এই নথি ইতিহাসবিদ এবং গোয়েন্দাদের কেনেডির হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নতুন তথ্য উন্মোচনের জন্য মরিয়া করে তুলেছে।
গত সোমবার ওয়াশিংটনের দ্য কেনেডি সেন্টারে এক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি প্রকাশের আগাম খবর দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সেদিন তিনি জানান, তার প্রশাসন জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত প্রায় ৮০ হাজার পৃষ্ঠার গোপন নথি প্রকাশ করবে। যেখানে কেনেডির হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক কিছু লেখা রয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, এটার জন্য লোকজন দশকের পর দশক অপেক্ষা করে আছেন। এটি খুবই কৌতূহলোদ্দীপক হতে যাচ্ছে।
এর আগে, গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর জন এফ কেনেডি, রবার্ট এফ কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত ফাইল প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে একটি নির্বাহী আদেশ দেন ট্রাম্প।
কেনেডির হত্যাকাণ্ড ঘিরে ছিল রহস্যের জাল। প্রকাশের পর নথিগুলো স্কলার ও ইতিহাসবিদরা তার মৃত্যুরহস্য অনুসন্ধানে ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়ারেন কমিশন কেনেডির হত্যাকারীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল যে, ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে প্রেসিডেন্ট কেনেডির সফরের সময় লি হার্ভে অসওয়াল্ড একাই তাকে হত্যা করেছিল। যদিও ২০২৩ সালের গ্যালাপ জরিপে ওয়ারেন কমিশনের এই ফলাফল বিশ্বাস করেননি ৬৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিক। স্কলাররা প্রকাশিত ফাইলগুলো পর্যালোচনা করেছেন। প্রাথমিক মূল্যায়নে অসওয়াল্ড সম্পর্কে ওয়ারেন কমিশনের বর্ণনায় তারা কোনো বিচ্যুতি খুঁজে পাননি।
প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সমস্ত অসামান্য রেকর্ড প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সংবেদনশীল তথ্য হওয়ায় সিআইএ ও এফবিআইসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তা পর্যালোচনা করার জন্য অতিরিক্ত সময় চায়। অবশেষে তা প্রকাশ হলো।
সূত্র: আল জাজিরা