আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দুই ভাই সাবেকমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দিকীর মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়ি বহরে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে। এ সময় দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল-সিলিমপুর সড়কের দশকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা।
তবে অভিযোগটি অস্বীকার করে মুরাদ সিদ্দিকী বলেন, আমি, কাদের ভাই ও লতিফ ভাই মাজার জিয়ারত শেষে বাসায় চলে এসেছি। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।
সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দিয়েছেন অক্টোবর মাসে এই নেতাকর্মীদের উৎখাত করবে। আমার বিবেক থেকে এটা প্রতিহত করতে হবে। আমি তো সন্ত্রাস কোনো কালেই করিনি। এটা প্রতিহত করতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। সে জন্য এসেছি কালিহাতীর জোকারচর ও গোহাইলবাড়ী এলাকায়। কোন সভা সমিতি না করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে এসেছি। নেতাকর্মীদের বলছি, নিজেদের মধ্যে ঐক্য রাখো এবং এই অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিবেন চৌদ্দ দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ন্যাড়া তো বেলতলা একবারই যায়। ২০১৮ সালে নির্বাচনে এসে আমি তা বুঝেছি। তখন আমার ৮০ ভাগ ভোট ছিলো। আমি খুনাখুনির মধ্যে থাকি না বলে চলে গেছি। আমি কোনো নির্বাচনের জন্য আসিনি।
মুরাদ সিদ্দিকীর বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আমার ৪/৫ জন ছেলেকে সে মারধর করছে, সে বিষয়ে নালিশ করছে। মুরাদ্দ সিদ্দিকী বিভিন্ন জনকে মোবাইলে হুমকি দিচ্ছে, সেটি আমি জানি। এলেঙ্গার মেয়রকে সে ভয় দেখাচ্ছে। আমি তাকে কখনও রাজনৈতিক নেতা মনে করিনি। সে কন্ট্রাকটার ও সন্ত্রাসী। এর বাইরে আমি কোনো চিন্তা করিনি। রাজনীতি, ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলো আজাদ সিদ্দিকী। আমার জানা মতে তিনি কোনো দিন আওয়ামী লীগও করেনি, ছাত্রলীগও করেনি। তাই ওকে নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নাই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে হজ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর মন্ত্রিত্ব ও দলের সভাপতিমন্ডলীর পদ হারানো আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। তারপর থেকে রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। সম্প্রতি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে লতিফ সিদ্দিকী জনসংযোগ করছেন। এ দিকে গত দেড় বছর যাবত মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতী আসনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সিদ্দিক পরিবারের দ্বন্দ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।