প্রবীণদের কর্মক্ষম রাখতে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যক্রমের ভূমিকা

0
প্রবীণদের কর্মক্ষম রাখতে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যক্রমের ভূমিকা

আজ পহেলা অক্টোবর, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রবীণ দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসের উদ্দেশ্য হলো প্রবীণদের অধিকার, মর্যাদা ও সুস্থতার বিষয়গুলো সামনে আনা এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করা।

২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‌‘Older Persons Driving Local and Global Action : Our Aspirations, Our Well-Being and Our Rights’ অর্থাৎ ‘প্রবীণরা কেবল সমাজের দায়িত্ব নয়, তারা নিজের অধিকার ও আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে স্থানীয় ও বৈশ্বিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হতে পারেন।’ এ প্রতিপাদ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রবীণরা শুধু যত্ন ও সহমর্মিতার দাবিদার নন, বরং সক্রিয় সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা সমাজে নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।

প্রবীণদের শারীরিক চ্যালেঞ্জ
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়—
    •    পেশীর শক্তি ও হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়
    •    হাঁটা ও ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়
    •    দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

এসব পরিবর্তন স্বাভাবিক হলেও সঠিক যত্ন না নিলে তা দ্রুত অক্ষমতায় রূপ নিতে পারে।

কর্মক্ষম রাখতে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যক্রম
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম ও ফিজিওথেরাপি। শারীরিক কার্যক্রম যেমন হাঁটা, হালকা ব্যায়াম, স্ট্রেচিং বা রেসিস্ট্যান্স ট্রেনিং প্রবীণদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়ক। এতে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে, ঘুম ভালো হয় এবং মানসিক প্রশান্তি আসে।

ফিজিওথেরাপি প্রবীণদের জন্য আরও কার্যকর কারণ এটি ব্যক্তিভিত্তিক। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর বয়স, শারীরিক অবস্থা ও সমস্যার ধরন অনুযায়ী বিশেষ ব্যায়াম নির্ধারণ করেন। এর মাধ্যমে—
    •    পেশী শক্তি ও নমনীয়তা বাড়ে
    •    হাঁটা ও ভারসাম্য উন্নত হয়, ফলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে
    •    দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আসে
    •    দৈনন্দিন কাজ সহজ হয়

ফিজিওথেরাপি শুধু চিকিৎসা নয়, বরং প্রতিরোধমূলক ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ প্রবীণরা অসুস্থ হওয়ার আগেই এ অনুশীলনের মাধ্যমে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে পারেন।

বিশ্ব প্রবীণ দিবস ২০২৫ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রবীণরা সমাজের বোঝা নয়; তারা অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভাণ্ডার। তাদের সুস্থ ও সক্রিয় রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আর সেই সুস্থতা ও কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে ফিজিওথেরাপি ও নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম হতে পারে প্রবীণদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সহযাত্রী।

লেখক : চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালটেন্ট
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here